বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়ার কিছু উপায়
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সারাদেশে বয়ে চলেছে তীব্র তাপপ্রবাহ। প্রায় সারা এপ্রিলজুড়েই বয়ে চলেছে এই তাপপ্রবাহ। এরপর মে মাসের শুরু থেকে কিছুটা কমেছে তাপমাত্রা। এ সময় কয়েকটি জেলায় হয়ে গেলো ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি। তবে এই বৃষ্টির সঙ্গে ব্যাপকহারে বজ্রপাত হয়েছে। এতে সারাদেশে কয়েক জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে এটা শুধু এ বছরই নয়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে বজ্রপাতে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
বজ্রপাতের নির্দিষ্ট সময় না থাকলেও ঝড়-বৃষ্টির সময় এর সম্ভাবনা থাকে শতভাগ। তাই কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চললে বজ্রপাতে প্রাণহানি থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়ার কিছু উপায়-
১. বিদ্যুতের খুঁটি, লাইন এবং উঁচু জায়গা থেকে দূরে থাকুন।
২. পানি থেকে সরে আসুন। নৌকায় থাকলে ছাউনির নিচে প্রবেশ করুন।
৩. আপনার ভবনে যদি বজ্রপাত নিরোধক ব্যবস্থা না থাকে তাহলে বজ্রঝড়ের সময় সবাই আলাদা আলাদা কক্ষে বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান করুন।
৪. মেঘের আওয়াজ শুনলেই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান।
৪. গাছের নিচে, টেলিফোন বা কোনো ধরনের সংযোগের খুঁটির পাশে দাঁড়াবেন না।
৫. গাড়ি থেকে বের না হয়ে ভেতরে আশ্রয় নিতে পারেন।
৬. ফাঁকা জায়গা, মাঠ, খেত ও যাত্রী ছাউনিতে থাকবেন না।
৭. পাহাড়ের চূড়া বা সমুদ্রসৈকতে অবস্থান করা ঠিক নয়।
৮. মুঠোফোন, কম্পিউটার, টিভি, ফ্রিজ ও বিদ্যুতের সুইচ বন্ধ রাখুন।
৯. টিনশেড বাড়ি থেকে সরে গিয়ে পাঁকা বাড়িতে অবস্থান নিতে পারেন।
১০. বাড়ির জানালা বন্ধ রাখুন। বজ্রপাতের সময় জানালা স্পর্শ করা যাবে না।
১১. বাড়ি নিরাপদ রাখতে আর্থিং সংযুক্ত রড মাটিতে স্থাপন করতে হবে।
১২. বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করা যাবে না।
১৩. বজ্রপাতের সময় শুয়ে পড়তে হবে।
১৪. বজ্রপাতে আহত ব্যক্তিকে স্পর্শ না করাই ভালো।
১৫. বৃষ্টি ও মেঘের গর্জন না থামা পর্যন্ত নিরাপদে থাকা বাঞ্ছনীয়।
১৬. গভীর ও উলম্ব আকৃতির মেঘ দেখলেই বুঝবেন বজ্রঝড় হতে পারে। যদি জরুরি প্রয়োজন থাকেই তাহলে রাবারের জুতো পরে বাইরে যাবেন।
১৭. গ্রামীণ অঞ্চলে মাঠে অবস্থান করলে পায়ের আঙুলে ভর দিয়ে দাঁড়ান। তারপর কানে আঙুল দিয়ে মাথা নিচু করে বসুন। বজ্রপাতের সময় এভাবে নিজেকে নিরাপদ রাখার চেষ্টা অনেক আগে থেকেই প্রচলিত।
১৮. উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের খুঁটিতে বজ্রপাতের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই এসব স্থানে আশ্রয় নেবেন না। খোলা স্থানে বিচ্ছিন্ন একটি যাত্রী ছাউনি, তালগাছ বা বড় গাছ ইত্যাদিতে বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি থাকে।
১৯. বজ্রপাতের সময় আপনি যদি ছোট কোনো পুকুরে সাঁতার কাটেন বা জলাবদ্ধ স্থানে থাকেন তাহলে সেখান থেকে সরে পড়ুন। পানি খুব বেশি বিদ্যুৎ পরিবাহী।
২০. বজ্রপাতে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে যদি আক্রান্ত হন তাহলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। বজ্রপাতে আক্রান্ত হলেই সবাই তাৎক্ষণিকভাবে মারা যান এমন না। তাই দ্রুত নিকটস্থ চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যান। বজ্রপাতে আহত হলে না ভেবেই ওই ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃৎস্পন্দন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালান।