স্ক্র্যাচে ভর করে ভাষা শহীদদের প্রতি প্রতিবন্ধী রিকশাচালকদের শ্রদ্ধা
আজ থেকে ৭২ বছর আগের এক বৃহস্পতিবার, বাংলা তারিখ ছিল ৮ ফাল্গুন, ইংরেজি ২১ ফেব্রুয়ারি। ভাষার দাবিতে রাজপথে নামা কিছু তরুণের বুকের তাজা রক্তে লাল হয় ঢাকার রাজপথ। আজ সেই দিনটিকে স্মরণ করার দিন। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
বাঙালি জাতির সেই সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগ পৃথিবীর ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে রয়েছে। বাংলা আজ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার মর্যাদা পেয়েছে। ২০০০ সাল থেকে সারা বিশ্বে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশে দিবসটি শহীদ দিবস হিসেবে পরিচিত। এই দিবসটিকে সামনে রেখে দেশের সর্বস্তরের মানুষেরা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তেমনিই এক দৃশ্য দেখা গেলো জাতীয় শহীদ মিনারে।
স্ক্র্যাচে ভর দিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রতিবন্ধী অটোরিকশা চালকরা। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রতিবন্ধী ঐক্য সমাজ, অটোচালক সমবায় সমিতির ব্যানারে শ্রদ্ধা জানান তারা।
এ সময় ‘মহানবীর শিক্ষা, করো না ভিক্ষা’; ‘অটোরিকশায় হয়রানি, বন্ধ কর করতে হবে’ নানা শ্লোগান দেন তারা।
তারা জানান, তারা ভিক্ষা করতে চান না, কর্ম করে খেতে চান। অটোরিকশা চালানোর সময় তাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়। এটা বন্ধ করতে হবে।
প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পর সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান। রাতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শ্রদ্ধা জানালেও বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রভাতফেরীতে সকাল গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হাজারো মানুষের ঢল নামে।
কালো পতাকা ও ব্যানার, হাতে ফুল নিয়ে নিয়ে পলাশী হয়ে জগন্নাথ হলের সামনে দিয়ে সবাই ধীর পায়ে এগিয়ে যান শহীদ মিনারের দিকে। সকাল ৬টা ২০ মিনিটে প্রভাতফেরীতে আসা মানুষদের শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন শুরু হয়। অনেকের শোকের আবহ ধরে রাখতে কালো পাঞ্জাবি, কালো শাড়ি পরে এসেছেন শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে।
শহীদ মিনার থেকে মৃদু আওয়াজে বাজছে থাকে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি…’সহ আরও অনেক দেশাত্মবোধক গান।