তারেক রহমান

ইতিহাসে জুলাই আন্দোলন বিরত্বগাথা হয়ে থাকবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ জুলাই ২০২৫, ১১:২৭ PM

বাংলাদেশের আধুনিক ইতিহাসে জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলন এক ভয়াবহ, দুঃখজনক ও বীরত্বগাঁথা অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপির) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, এ সময় জনগণের প্রতিরোধ, রাষ্ট্রীয় দমনপীড়ন এবং গণতন্ত্রের জন্য চরম আত্মত্যাগের এক নির্মম চিত্র ফুটে উঠেছে।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে তিনি এ কথা লেখেন।

ফেসবুক পোস্টে তারেক রহমান লেখেন, দীর্ঘ ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশ একটি দমনমূলক শাসনের ভার বহন করেছে। এই সময়ে হাজারো নাগরিক, রাজনৈতিক কর্মী, শিক্ষার্থী, কৃষক, গার্মেন্ট শ্রমিক, নারী ও শিশু বিচারবহির্ভূত হত্যা, অপহরণ এবং পদ্ধতিগত নিপীড়নের শিকার হন। এসব ঘটনায় একটি দীর্ঘ ও বেদনাদায়ক তালিকা তৈরি হয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসে যখন আন্দোলন সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে, তখন সরকারি বাহিনীর হাতে প্রাণ হারান অন্তত ১ হাজার ৫০০ জন, তাদের মধ্যে অন্তত ৪২২ জন ছিলেন তৎকালীন বিরোধী দল বিএনপির সঙ্গে যুক্ত। আহত হন ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ, যাদের অনেকে চিরস্থায়ী শারীরিক ক্ষতির শিকার হন।

তিনি আরও লেখেন, সবচেয়ে মর্মান্তিক দিক ছিল শিশুদের হত্যাকাণ্ড। মাত্র ৩৬ দিনের ব্যবধানে ১৩৬টি শিশুর মৃত্যু ঘটে। চার বছর বয়সী আবদুল আহাদ এবং ছয় বছর বয়সী রিতা গোপের মতো অবুঝ শিশুরাও রাষ্ট্রীয় সহিংসতার বলি হয়। এ নৃশংসতা অনেকেই ‘সভ্য সমাজে অকল্পনীয়’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

শাহীদ আবু সাঈদ, মুগ্ধ ও ওয়াসিমসহ অসংখ্য নাম না-জানা শহীদের আত্মত্যাগ আজও জাতীয় বিবেককে নাড়া দেয় উল্লেখ করে তিনি লেখেন, এই সংগ্রাম বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ, ৭ নভেম্বর ১৯৭৫ এর স্বৈরতন্ত্রবিরোধী আন্দোলন ও ১৯৯০ সালের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের সামনে রয়েছে একটি ঐতিহাসিক সুযোগ—একটি আধুনিক, গণতান্ত্রিক, মানবিক ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার। বিশ্ব এখন দ্রুত পরিবর্তনশীল ও প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠছে, এবং এ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে আমাদের এখনই সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে হবে অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে।

সবশেষে তিনি লেখেন, এখন সময় এসেছে, শহীদদের রক্তের ঋণ শোধের। একটি এমন বাংলাদেশ গড়ার, যেখানে জনগণের ভোটে সরকার গঠিত হবে, এবং সেই সরকার জনগণের প্রতি জবাবদিহি থাকবে।