শেষ বিচারের দিন মুমিনদের বিজয় হবে
যুগে যুগে কিছু মানুষ থাকেন যারা দীনের সত্যিকথা অনুসরণ না করে, শুধু নিজেদের স্বার্থে ইসলাম বা কাফেরদের দিকে ঝুঁকেন। এরা মুনাফিকের চিহ্ন বহন করে, যারা আল্লাহর পথ অনুসরণ করার বদলে নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী মনোভাব পরিবর্তন করে।
ইসলামি সমাজে এমন মানুষের আচরণ অতীতে যেমন ছিল, তেমনি আজও তাদের প্রভাব দেখা যায়। তাদের বৈশিষ্ট্য এক এবং চিরন্তন, প্রত্যেক বিপদে তারা নিজস্ব স্বার্থের দিকে মনোযোগ দেয়, আর যখন মুসলিমদের বিজয় হয়, তারা তখন দাবী করে, আমরা তো তোমাদের পক্ষেই ছিলাম। এমন এক আচরণবিধির কথা তুলে ধরেন আল্লাহ তাআলা সুরা নিসার ১৪১ নম্বর আয়াতে অত্যন্ত সুস্পষ্ট ভাষায়। আল্লাহর এ নির্দেশের মাধ্যমে মুসলমানদের কাছে দুটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রদান করা হয়েছে তাহলো, মুনাফিকদের দ্বিচারিতা এবং কিয়ামতের দিন আল্লাহর বিচার।
মুনাফিকরা যখন মুসলিমদের বিজয়ে অংশ নেয়ার সুযোগ পায়, তখন তারা নিজেদের দাবী করে যে, তারা সব সময় মুসলিমদের পাশে ছিল। আবার যখন কাফেররা কিছু বিজয় লাভ করে, তখন তারা মুমিনদের বিরুদ্ধে নিজেদের সহযোগিতা প্রকাশ করতে থাকে। তারা দাবি করে, আমরা তোমাদের জন্য কাফেরদের মোকাবিলা করতে সাহায্য করেছি।
এটি মুনাফিকদের দুই মুখী আচরণের উদাহরণ। তারা ইসলাম ও কাফেরদের মধ্যে যে সুরক্ষিত অবস্থান নেবার চেষ্টা করে, তা মূলত তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে, দুনিয়ার কোনো পক্ষ থেকে লাভবান হওয়ার জন্য। ইসলামি শাস্ত্রবিদরা এদের আচরণকে ‘মৌলবাদী-বিরোধিতা’ বা ‘বিদ্বেষপরায়ণ’ মুসলিমদের বিরুদ্ধে এক ধরনের আড়াল মেনে চলে বলে চিহ্নিত করেছেন।
এ আয়াতে আল্লাহ একথাও স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, কিয়ামতের দিন তিনি মুমিনদের বিরুদ্ধে কাফেরদের জন্য কোনো পথ রাখবেন না। অর্থাৎ, সত্যের অনুসারীরা পৃথিবীতে যতই ক্ষতিগ্রস্ত হোক, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাদের প্রতিদান দেবেন এবং কাফেরদের কোনো সুযোগ থাকবে না। এটি আমাদের জানিয়ে দেয় যে, দুনিয়াতে কাফেররা কিছু মুহূর্তের জন্য মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিজয়ী হলেও, চূড়ান্ত বিজয় আল্লাহর পক্ষেই থাকবে, যিনি সকল বিচারের মালিক।