ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র করার প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো
ফের জাতিসংঘে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত এই খসড়া প্রস্তাবে ১৯৩ সদস্যের সাধারণ পরিষদকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল। এই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, 'ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে জাতিসংঘের সদস্যপদ দেওয়া হোক'।
নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১২ সদস্য ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে ভোট দেয়। যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড ভোটদানে বিরত থাকে। তবে পাঁচ স্থায়ী সদস্যের মধ্যে ইসরায়েলের অন্যতম মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোতে এই প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়।
প্রস্তাবটি পাস হতে নিরাপত্তা পরিষদে ৯টি ভোটের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর ফলে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়নি। নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের রয়েছে এই ভেটো ক্ষমতা। ভেটো ক্ষমতাযুক্ত দেশগুলো হলো- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীন। নিরাপত্তা পরিষদের কোনো প্রস্তাবে এদের মধ্যে কোনো একটি দেশ বিপক্ষে ভোট দিলে ওই প্রস্তাব আর গৃহীত হয় না।
নিরাপত্তা কাউন্সিলে যুক্তরাষ্ট্রের উপরাষ্ট্রদূত রবার্ট উড কাউন্সিলকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র দুই-রাষ্ট্র সমাধানে প্রবল সমর্থন অব্যাহত রাখবে। এই ভোটের অর্থ এই নয় যে আমরা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার বিরোধিতা করছি। বরং এর মাধ্যমে আমরা উল্লেখ করতে চাই যে এই সমাধান শুধু দু’পক্ষের সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে আসতে পারে।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান অন্যায্য, অনৈতিক ও অন্যায়।
এদিকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পূর্ণাঙ্গ সদস্যপদ লাভের প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরান। তেহরান আমেরিকার এ পদক্ষেপকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অগঠনমূলক’ বলে বর্ণনা করেছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানয়ানি শুক্রবার তেহরানে বলেছেন, “আমেরিকার ভেটো বিশ্বেবাসীর সামনে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির কপটতা ও ভণ্ডামি প্রমাণ করেছে। এর ফলে আমেরিকা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরো বেশি একঘরে হয়ে পড়েছে।”
ফিলিস্তিন বর্তমানে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক সদস্য হিসেবে রয়েছে। ২০১২ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে কার্যত রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেয়েছিল ফিলিস্তিন। তবে পূর্ণ সদস্যপদ পেতে নিরাপত্তা পরিষদ এবং সাধারণ পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের অনুমোদন প্রয়োজন।
সাধারণ পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য ইতিমধ্যে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।