৩১ লাখ প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য দুঃসংবাদ

চলতি মাসেই দেশের আট বিভাগের ১৫০টি উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩১ লাখের বেশি শিশুশিক্ষার্থী ‘মিড ডে মিল’ বা দুপুরের খাবার পাওয়ার কথা ছিল। তবে টেন্ডার প্রক্রিয়া এখনো সম্পন্ন না হওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এখনো এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে পারেনি।
সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে এ কর্মসূচি চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এই স্কুল ফিডিং কর্মসূচি বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকবে।
অধিদপ্তর সূত্র জানায়, 'প্রাথমিকভাবে দেশের আট বিভাগের ৬২ জেলার ১৫০ উপজেলার ১৯ হাজার ৪১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী এ প্রকল্পের সুবিধাভোগী হবে।'
প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) ও যুগ্ম সচিব হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, 'এ প্রকল্পটি চলবে ২০২৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পটি সফল হলে সারা দেশের স্কুলগুলোয় মিড ডে মিল চালু করা হবে।'
তিনি বলেন, "প্রকল্পটি আগামী সেপ্টেম্বরে চালুর জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রক্রিয়া সম্পন্নে আমরা কাজ করছি। অক্টোবরে টেন্ডার কার্যক্রম শেষ হবে বলে আশা করছি। সব কিছু ঠিক থাকলে সেপ্টেম্বরে শিক্ষার্থীদের হাতে খাবার পৌঁছাতে পারব।"
হারুন অর রশীদ আরও বলেন, "শিক্ষার্থীদের নিরাপদ খাদ্য তুলে দেওয়া আমাদের লক্ষ্য। এটি নিশ্চায়ন জরুরি। তাই সব দিক খেয়াল রেখে আমরা এগোচ্ছি। সব প্রক্রিয়া প্রায় শেষের দিকে।"
মোট ৫ হাজার ৪৫২ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে স্কুল ফিডিং প্রকল্পে। এর ৯৭ শতাংশ ব্যয়ই নির্ধারণ করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের জন্য খাবার সরবরাহে।
২০২৫-২৬ অর্থবছরে এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ১৬৪ কোটি টাকার বেশি। প্রকল্পের আওতায় সপ্তাহে পাঁচ দিন স্কুল চলাকালীন শিক্ষার্থীদের মাঝে পুষ্টিকর খাবার বিতরণ করা হবে। খাদ্য তালিকায় থাকবে বনরুটি, সিদ্ধ ডিম, ইউএইচটি দুধ, ফরটিফাইড বিস্কুট এবং মৌসুমি ফল বা কলা।
সাপ্তাহিক মেনু অনুযায়ী, রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার দেওয়া হবে বনরুটি ও সিদ্ধ ডিম; সোমবার বনরুটি ও দুধ; আর বুধবার পরিবেশন করা হবে ফরটিফাইড বিস্কুট ও মৌসুমি ফল বা কলা। নির্ধারিত ওজনে প্রতিটি বনরুটি হবে ১২০ গ্রাম, ডিম ৬০ গ্রাম, দুধ ২০০ গ্রাম, বিস্কুট ৭৫ গ্রাম এবং ফল ১০০ গ্রাম।
এদিকে উপজেলা পর্যায়ে ইউএনওর নেতৃত্বে একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক এবং প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত আছেন। পাশাপাশি প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।