সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করল ইউরোপের শক্তিশালী দেশ

দীর্ঘ এক যুগের গৃহযুদ্ধ শেষে অবশেষে সিরিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করছে যুক্তরাজ্য। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির দামেস্ক সফরের পর এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেওয়া হয়। সম্পর্ক পুনরায় চালুর পাশাপাশি সিরিয়াকে ১২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য।
এক বিবৃতিতে ল্যামি বলেছেন, সিরীয় জনগণের জন্য নতুন আশা জেগে উঠেছে। স্থিতিশীল, অধিক নিরাপদ এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য সিরিয়ার নতুন সরকারকে তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণে সহায়তা করা আমাদের স্বার্থের অন্তর্ভুক্ত।
সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের মুখে গত ডিসেম্বরে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে পশ্চিমারা ধীরে ধীরে দামেস্কের বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনছে।
ল্যামি গত ১৪ বছরে সিরিয়ায় প্রথম কোনও ব্রিটিশ মন্ত্রী হিসেবে সফর করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ার ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কর্মসূচি বাতিলের একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করার কয়েক দিন পর এই সফর অনুষ্ঠিত হয়েছে। ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের পর আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্নতা কাটিয়ে উঠতে এবং যুদ্ধের পর নিজেদের পুনর্গঠনে সহায়তা পাবে সিরিয়া।
গত এপ্রিলে দেশটির বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিলের ঘোষণা দেয় ব্রিটেনও। এই ঘোষণার পর বিনিয়োগ উৎসাহিত করার জন্য সিরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বিভিন্ন তেল কোম্পানিসহ ২৩টি সংস্থার সম্পদ অবমুক্ত করা হয়েছে। তবে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারের সদস্যদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা হয়েছে।
শনিবার ঘোষিত আর্থিক সহায়তা প্যাকেজটি সিরিয়ায় জরুরি মানবিক সহায়তার পাশাপাশি শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের মাধ্যমে দেশটির দীর্ঘমেয়াদী পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবে বলে সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
সফরে সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ হাসান আল-শিবানি এবং প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার সঙ্গে বৈঠক করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যামি। তিনি বলেন, স্থিতিশীল সিরিয়া ‘অনিয়মিত অভিবাসনের’ ঝুঁকি হ্রাস, রাসায়নিক অস্ত্রের ধ্বংস নিশ্চিত ও সন্ত্রাসবাদের হুমকি মোকাবিলা করবে।
বৈঠকে সিরিয়ায় একটি ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রতিনিধিত্বশীল রাজনৈতিক রূপান্তরের’ গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছেন ল্যামি। একই সঙ্গে দেশটিতে ব্রিটেনের সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলেও প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
সূত্র: রয়টার্স