যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষণে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর নতুন করে চরম উত্তেজনা তৈরি হয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। দুই দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ও হুমকির মধ্য দিয়ে সম্পর্ক আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। সবশেষ তিনদিনে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বিরাজমান এ অস্থির পরিস্থিতিতে নিজেদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছে দেশটি। একইসঙ্গে বিবাদমান দেশ দুটিকে দায়িত্বপূর্ণ সমাধানের আহ্বানও জানানো হয়েছে মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, পেহেলগাম হামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রয়টার্সকে ইমেইলে একটি বিবৃতি পাঠিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। বিবৃতিতে প্রকাশ্যে ভারতকে সমর্থন জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে, পাকিস্তানের কোনো সমালোচনা করা হয়নি সেখানে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ওই বিবৃতিতে বলেছেন, এটি একটি পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি। বিষয়টির প্রতি আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং ভারত ও পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে একাধিকভাবে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সব পক্ষকে একত্রে দায়িত্বশীল সমাধানের জন্য উৎসাহ দিচ্ছে।
এরপরই মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেছেন, ওয়াশিংটন ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও একই মন্তব্য করেছেন।
ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ এশিয়াতে চীনের প্রভাব কমাতে ওয়াশিংটন ভারতকে বেছে নিয়েছে। অবশ্য, পাকিস্তানকেও গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে, ২০২১ সালে আফগান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের পর পাকিস্তানের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক কিছু ভাটা পড়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় পর্যটকশ ২৬ জন নিহত হন। পরোক্ষভাবে পাকিস্তান এ হামলায় জড়িত, এমন অভিযোগ তুলে বুধবার দেশটির সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে ভারত। পাশাপাশি আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় দেশটি।
কোনোরকম তদন্ত ছাড়াই ভারতের এমন পদক্ষেপকে ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ হিসেবে দেখছে পাকিস্তান। এমন অবস্থায় সিন্ধু নদের পানি ইস্যুতে কড়া বার্তা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। স্পষ্ট ভাষায় তিনি বলে দিয়েছেন, যেকোনো মূল্যে নিজের পানির অধিকার রক্ষা করবে পাকিস্তান।
সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের জেরে ভারতকে হুমকি দিয়েছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা ও দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টোও। তিনি বলেছেন, সিন্ধু দিয়ে হয় পানি বইবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে।