অসামান্য অবদানের নামে রাজউকের প্লট বরাদ্দ বাতিলের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ মার্চ ২০২৫, ১১:০৩ AM

অস্যামান্য অবদানের নামে বিভিন্ন ব্যক্তিকে রাজউকের প্লট বরাদ্দ দেওয়ার রেকর্ড রয়েছে। তবে এবার ‘অসামান্য অবদানের’ নামে অনুগত, তোষামোদকারীদের রাজউকের প্লট বরাদ্দের নিয়ম বাতিল চান বিশ্লেষকেরা। তাদের মতে, মন্ত্রী-এমপি, ব্যবসায়ী, চাকুরীজীবী, আমলা, সাংবাদিক, শিল্পী, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা এমনকি গাড়িচালকরাও বিশেষ বিবেচনায় প্লট পেয়েছেন। যা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়ারই সামিল বলে মনে করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

জানা যায়, ঢাকায় রাজউকের ৩টি আবাসন প্রকল্প উত্তরা, পূর্বাচল ও ঝিলমিল। এগুলোর প্লট সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩৬ হাজার। সাধারণের কাছ থেকে প্রতি কাঠা ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় অধিগ্রহণ করে রাজউক গড়ে তুলেছে আবাসন প্রকল্প। আর এতে সংরক্ষিত কোটায় জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে প্রভাবশালীদের। 

রাজউক প্লট বরাদ্দ নীতিমালার ১৩/এ উপবিধির অধীনে গত ১৬ বছরে হাসিনা সরকার প্রায় হাজার খানেক প্লট বরাদ্দ দিয়েছে অনুগত-তোষামদকারী আমলা, মন্ত্রী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক-শিল্পীসহ নানা স্তরের প্রভাবশালীদের। যার স্বচ্ছতা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়। রাজউক এর দায় এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকেরা। 

দুদকের সাবেক মহাপরিচালক মঈদুল ইসলাম বলেন, যে ৮৩০টি বিতর্কিত প্লট বরাদ্দ করেছেন বিতর্কিত ব্যক্তিদের নামে, সেইটা তারা (রাজউক) লিখিত পেয়েছিলেন কিনা, কীভাবে তারা করলেন...! প্লট বরাদ্দ দেওয়া হলো, সেই বিষয়টি স্বচ্ছতার জন্য রাজউকের পক্ষ থেকে সাথে সাথে গণমাধ্যমে প্রকাশ করে দেওয়া উচিত।’

ঢাকাকে বসবাস অযোগ্য করে তুলতে রাজউকের দায় সবচেয়ে বেশি বলে দাবি করেছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি জানান, সর্বোচ্চ জায়গা থেকে নিজের অনুগতদের দুর্নীতি-অনিয়মকে বৈধতা দিয়েছেন পতিত সরকার প্রধান শেখ হাসিনা। রাজউকের অ্যালটমেন্ট অব ল্যান্ডস রুলসের ১৩/এ উপবিধি বাতিলেও মত দিয়েছেন তিনি।    

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দুর্নীতিকে প্রশয় শুধু নয় দুর্নীতির অংশীদার হওয়া এবং দুর্নীতিকে সুরক্ষা দেওয়া এই বিষয়গুলো মূলত হয়েছে। এর মাধ্যমে এক ধরনের বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, ক্ষমতার কাছাকাছি থাকলে সমস্ত সুবিধা অর্জন করা যায়।’

রাজউকের অ্যালটমেন্ট অব ল্যান্ডস রুলসের ১৩/এ উপবিধি নিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, আমরা চাই এই বিশেষ ধারাটি এমনভাবে বাতিল করা হোক যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের সুবিধা আর কেউ না পায়।’  

২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে রাজউকের প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে গত ২৪ অক্টোবর ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেয় হাইকোর্ট। ১২০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে তাদের।