পদাবনতি দেওয়া হলো রাজউকের সেই উজ্জ্বল মল্লিককে
পদাবনতি দেওয়া হলো রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্রধান প্রকৌশলী (প্রকল্প ও ডিজাইন) উজ্জ্বল মল্লিককে। গতকাল বুধবার (০৬ নভেম্বর) রাজউকের এক অফিস আদেশে উজ্জ্বল মল্লিককে পদাবনতি দেওয়া হয়েছে। এতে করে তিনি প্রধান প্রকৌশলীর পদ থেকে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদে আসীন হলেন।
রাজউকের অফিস আদেশে বলা হয়েছে, রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী উজ্জ্বল মল্লিকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ, তার কারণ দর্শানোর জবাব, বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন, ব্যক্তিগত শুনানী এবং সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পর্যালোচনা করে 'অসদাচরণ' এর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে আদেশের তারিক হতে ৫ বছরের জন্য 'তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী' পদে নামিয়ে দেওয়ার গুরুদণ্ড আরোপ করা হলো।
আদেশে আরও বলা হয়েছে পদাবনতি বলবৎ থাকার সময়কাল তিনি বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির জন্য গণনাযোগ্য হবেন না। তবে শাস্তির মেয়াদকাল শেষ হলে তিনি সয়ংক্রিয়ভাবে ৫০, ০০০- ৭১, ২০০ টাকার বেতন স্কেলে প্রত্যাবর্তন করবেন। তিনি কোনো বকেয়া প্রাপ্য হবেন না।
জানা যায়, প্রকৌশলী উজ্জ্বল মল্লিক ২০০৯ সালে প্রকল্প কর্মকর্তা হয়ে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে যোগ দেন। পরে তিনি ওই প্রকল্পে অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক এবং পরে পদোন্নতি পেয়ে প্রকল্প পরিচালক (পিডি) হন । ২০২০ সাল পর্যন্ত তিনি পিডি ছিলেন। একপর্যায়ে সংস্থাটির প্রধান প্রকৌশলী হয়েও পিডির পদে ছিলেন। পরে তাঁকে পিডির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পিডি থাকাকালে প্রকল্পের মহাপরিকল্পনায় বাণিজ্যিক ব্লকের সঙ্গে থাকা একটি আরবান ইউটিলিটি ফ্যাসিলিটির (ইউইউএফ) জায়গায় ৭ কাঠা আয়তনের প্লট বানিয়ে নিজের নামে বরাদ্দ নেন। পূর্বাচল প্রকল্পের ৫ নম্বর সেক্টরের ১০৩ নম্বর রোডের ৯১ নম্বর প্লটটির জন্য সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অথচ প্লটটির বাজারমূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা।
রাজউক সূত্র বলেছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রধান প্রকৌশলী (ডিজাইন ও নকশা) পদে পদোন্নতি পাওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে উজ্জ্বল মল্লিকের বিরুদ্ধে। পদোন্নতির জন্য নিয়ম অনুযায়ী তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ হেলালীর কাছ থেকে বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন (এসিআর) নেওয়ার কথা থাকলেও তিনি নেন আরেক প্রকৌশলী এ এস এম রায়হানুল ফেরদৌসের কাছ থেকে। বিষয়টি নিয়ে সংস্থাটির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম লিখিত অভিযোগ দিলে ৮ আগস্ট উজ্জ্বল মল্লিককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় কর্তৃপক্ষ। তিনি লিখিত জবাব দিলে ১৮ আগস্ট তা গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেন রাজউকের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ছিদ্দিকুর রহমান সরকার।
সূত্র বলছে, ওই পদে পদোন্নতির তালিকায় এক নম্বরে ছিলেন আব্দুল লতিফ হেলালী ও দুই নম্বরে ছিলেন নুরুল ইসলাম। এ পদোন্নতির অংশ হিসেবে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় যে দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু করেছিল, সেখানে আপত্তি দিয়েছিল দুদক। অনাপত্তি চাওয়া হলে ছক আকারে পাঠানো পত্রে দুদক উজ্জ্বল মল্লিকের নামের পাশে দুদকের মামলা করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
এসব বিষয়ে উজ্জ্বল মল্লিকের সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।