সহকর্মীর শরীরে অশালীন স্পর্শ; বরখাস্ত হলেন রাজউকের শেখ শাহিন

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩১ PM

সহকর্মীর সঙ্গে অশালীন আচরণের জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিচালককে (জোন-৭) বরখাস্ত করা হয়েছে।

আজ রবিবার (১০ নভেম্বর) রাজউকের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান সরকার স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, রাজউকের সহকারি নগর পরিকল্পনাবিদ (জোন-৭) ফারজানা কনিকা পরিচালক শেখ শাহীনুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, আজ সকাল সাড়ে দশটায় পরিচালক শাহীনুল ইসলাম অনাকাঙ্ক্ষিত, অপ্রত্যাশিত ও অশালীনভাবে তার শরীর স্পর্শ করেন। ঘটনার আকষ্মিকতায় ফারজানা কনিকা হতভম্ব হন এবং মানসিকভাবে ট্রমাটাইজ হয়ে যান। 

তার এহেন কর্মকাণ্ড চাকুরি শৃঙ্খলা পরিপন্থি হওয়ায় শাহীনুল ইসলামকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। 

এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও অফিস আদেশে জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, জানা যায়, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে রাজউকে দাপট দেখিয়ে বেড়িয়েছেন এমন অভিযোগ রয়েছে পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে। গোপালগঞ্জের বাসিন্দা শেখ শাহিন রাজউকের সবচেয়ে বড় প্রকল্প পূর্বাচলের পরিচালক (এস্টেট) হিসেবে ২০১৫ সালে দায়িত্বে আসেন। সম্প্রতি তাঁকে অন্যত্র বদলি করা হয়। তিনি অফিস সহকারী থেকে পদোন্নতি পেয়ে পরিচালক হয়েছেন। 
অভিযোগ রয়েছে, শেখ শাহিন ইচ্ছেমতো অফিস করতেন। মোবাইলও বন্ধ রাখতেন। ফলে সেবাপ্রত্যাশীরা তাঁকে পেতেন না। তাঁর বিরুদ্ধে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং একজন বিচারকের দেওয়া লিখিত অভিযোগের পর তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় পূর্ত মন্ত্রণালয়। গত বছরের ৭ আগস্ট গঠন করা হয় তিন সদস্যের একটি কমিটি। কমিটির আহ্বায়ক করা হয় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ-২) মো. হামিদুর রহমান খান ও সদস্যসচিব উপসচিব (প্রশাসন-ও) মো. মনিরুজ্জামানকে। তবে এই কমিটি এখনো প্রতিবেদন দেয়নি। 

পূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পূর্বাচল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ পাওয়া একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ৫০ লাখ টাকা ঘুষ দাবির লিখিত অভিযোগ করেন শেখ শাহিনের বিরুদ্ধে। আবুল হাসেম খন্দকার নামের আরেক ব্যক্তিও মোটা অঙ্কের ঘুষ দাবির অভিযোগ আনেন। অভিযোগ অনুযায়ী, নথি ঠিক করার জন্য তাঁর কাছে ২ কোটি টাকা ঘুষ দাবি করা হয়েছিল। টাকা না দেওয়ায় শেখ শাহিন তাঁর নথি দেড় বছরের বেশি সময় আটকে রাখেন। এসব অভিযোগের পর শুরু হয় তদন্ত। 

শেখ শাহিনের বিরুদ্ধে তাঁর ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে পরিচিত একটি কেমিক্যাল কোম্পানির নির্বাহী পরিচালককে নিজ দপ্তরে মারধরের অভিযোগও রয়েছে। ওই ব্যক্তি রাজউকের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগে জানান, শেখ শাহিন ৩০ শতাংশ সুদে তাঁকে ৫০ লাখ টাকা ধার দেন। কিস্তিতে সুদসহ আসল পরিশোধ করলেও একদিন তাঁকে রাজউকের পূর্বাচল সেলে ডেকে নিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। 

জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মো. হামিদুর রহমান খান বলেন, ‘তদন্তকাজ প্রায় শেষপর্যায়ে। খুব দ্রুত প্রতিবেদন জমা দিব।’

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে রাজউকে শেখ শাহিনের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে ফোন দিয়ে তা বন্ধ পাওয়া যায়।