মস্তিষ্ক শক্তিশালী করতে কিছু অভ্যাস ত্যাগ করুন
মস্তিষ্ক আমাদের মানবদেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। মস্তিষ্ক আমাদের স্মৃতি, অনুভূতি এবং চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করে। মস্তিষ্ক যতই ব্যবহৃত হয়, ততই শক্তিশালী আর কার্যকর হয়। তবে দৈনন্দিন জীবনের এমন কিছু অভ্যাস আছে যা আপনার অজান্তে মস্তিষ্কের ক্ষতি করতে পারে। যেমন-
অপর্যাপ্ত ঘুম
ব্যস্ত জীবনে অনেকেই ঘুমের মূল্য উপেক্ষা করেন। কিন্তু পর্যাপ্ত ঘুম স্মৃতিশক্তি উন্নত করে, সারাদিন কর্মক্ষম রাখে। ভালো ঘুমের জন্য সময়মতো ঘুমানো, ঘুমানোর অন্তত এক ঘন্টা আগে অ্যালকোহল এবং ক্যাফেইন থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে ঘুমানোর অন্তত এক ঘণ্টা আগে সব ধরনের ডিভাইস থেকে দূরে থাকতে হবে।
কম পানি খাওয়া
পানি মস্তিষ্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। অনেকেই দিনে পর্যাপ্ত পানি পান করেন না। এই অভ্যাস আপনার স্মৃতিশক্তি এবং মনোযোগকে প্রভাবিত করতে পারে। এ কারণে সারা দিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। বিশেষ করে শারীরিক কার্যকলাপের আগে এবং পরে,মস্তিষ্ককে উজ্জীবিত রাখতে পানি পান প্রয়োজন।
সকালের নাশতা এড়িয়ে যাওয়া
প্রতিদিন নিয়মিত সকালের নাশতা মস্তিষ্ককে সারাদিনের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি দেয়। অথচ অনেকেই সকালের নাশতা করেন না। জানেন কি ফাইবার, প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ একটি সুষম নাশতা আপনার মন্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে ভূমিকা রাখে।
অপুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ
অতিরিক্ত পরিমাণে চিনি, লবণ, চর্বি এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ করলে আলঝেইমার এবং পারকিনসনের মতো রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে রেড মিট, দুগ্ধজাত খাবারের পাশাপাশি খাদ্যতালিকায় ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য, বাদাম, বীজ এবং মাছ রাখুন।
দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা
প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে এখন আমাদের দৈনন্দিন কাজে অনেক পরিবর্তন এসেছে। কম্পিউটার, ল্যাপটপের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে ঘণ্টার পর ঘন্টা বসে কাজ করছি। গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকার ফলে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ কমে যেতে পারে। মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে শারীরিক কার্যকলাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য সপ্তাহে ৫ দিন আধ ঘণ্টা করে অন্তত ৩০ মিনিট শরীরচর্চা জরুরি। এছাড়া একটানা বসে না থেকে প্রতি ১৫ থেকে ৩০ পর পর একটু বিরতি নিন।
অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে স্ত্রিনের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম ক্লান্তি এবং অনিদ্রার কারণ হতে পারে। বড়দের মতো শিশুরাও যদি স্ক্রিনে অতিরিক্ত সময় কাটায় তাহলে তা তাদের মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে। এ কারণে সবারই স্ক্রিন টাইম সীমিত করা প্রয়োজন।
জোরে গান শোনা
যদিও সঙ্গীত আমাদের মন ভালো রাখে, তারপরও অতিরিক্ত জোরে গান শোনা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। দীর্ঘমেয়াদে জোরে জোরে গান শোনা মস্তিষ্কের গঠন এবং কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে। কখনও কখনও জোরে জোরে শব্দ শ্রবণশক্তি হ্রাস করতে পারে।
চলুন আমরা নিজেরা সচেতন হয় এবং শরীর স্বাস্থ্য ও মনের যত্ন নিই।