এনথ্রাক্স ছড়ানোর কারণ ও প্রতিকার

বর্তমানে দেশে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে এনথ্রাক্স। দেশের উত্তরাঞ্চলীয় রংপুর জেলায় অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত দুই মাসে জেলায় শতাধিক গরু অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। পাশাপাশি, অর্ধশতাধিক মানুষও সংক্রমিত হয়েছে। যার মধ্যে পীরগাছা উপজেলায় দুই জনের মৃত্যু হয়েছে।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী মিঠাপুকুরে ৬ জন আক্রান্ত হলেও স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী ১৫ জনেরও বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছে। রংপুরের পাশাপাশি মেহেরপুরের তিন উপজেলার ৪৬৪ জন অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়েছেন।
অ্যানথ্রাক্স কী ও কীভাবে ছড়ায়?
অ্যানথ্রাক্স মূলত ব্যাকটেরিয়াজনিত গুরুতর সংক্রামক রোগ। ব্যাসিলাস অ্যানথ্রাসিস ব্যাকটেরিয়ার কারণে এ রোগ হয়। এটি মূলত গবাদিপশুতে দেখা যায়, তবে সংক্রমিত পশু বা তাদের পণ্য (চামড়া, পশম, মাংস) থেকে মানুষও আক্রান্ত হতে পারে।
মানুষ সাধারণত তিনভাবে সংক্রমিত হতে পারে:
ত্বকের মাধ্যমে: সংক্রমিত পশুর চামড়া বা পশম স্পর্শ করলে।
শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে: স্পোরযুক্ত বাতাস ফুসফুসে প্রবেশ করলে।
খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে: সংক্রমিত পশুর মাংস খেলে।
উপসর্গ
ত্বকের অ্যানথ্রাক্স: চুলকানিযুক্ত বাম্প, পরবর্তীতে ব্যাথাহীন কালো আলসার, জ্বর, মাথাব্যথা।
শ্বাসনালী/ফুসফুসের অ্যানথ্রাক্স: ফ্লু-সদৃশ লক্ষণ, জ্বর, কাশি, পেশী ব্যথা; গুরুতর হলে শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যথা।
পরিপাকতন্ত্রের অ্যানথ্রাক্স: বমি, জ্বর, পেটে ব্যথা। গুরুতর হলে রক্তাক্ত ডায়রিয়া ও অন্ত্রের প্রদাহ।
প্রতিরোধ ও করণীয়
পশুদের নিয়মিত অ্যানথ্রাক্স টিকা দেওয়া।
সংক্রমিত পশু বা মৃত পশুর সংস্পর্শ এড়ানো।
আক্রান্ত পশুর জবাই বন্ধ রাখা।
মৃত পশু মাটির গভীরে পুঁতে সৎকার করা।
মৃত পশু সৎকারের সময় গ্লাভস ও সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম ব্যবহার করা।
সচেতনতা বাড়ানো ও সতর্কতা অবলম্বন করাই এই মারাত্মক রোগের সংক্রমণ রোধের প্রধান হাতিয়ার।