গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বের করে দেয়ার প্রস্তাব ইসরায়েলের; যুক্তরাষ্ট্র বললেন দায়িত্বজ্ঞানহীন
ইসরায়েলি দুই মন্ত্রীর প্রস্তাবের নিন্দা করলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের গণহারে বের করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ইসরায়েলের কট্টরপন্থী দুই মন্ত্রী। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির ও অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মতরিচ ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে বের করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে ইসরায়েলি মন্ত্রীদের এমন প্রস্তাবকে দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে আখ্যা দিয়ে এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি মন্ত্রীদের এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে। বিবৃতিতে স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনিদের গাজার বাইরে বের করে দিয়ে অন্য কোথাও পুনর্বাসনের আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি মন্ত্রী বেজালেল স্মতরিচ ও ইতামার বেন-গভির সম্প্রতি যে বিবৃতি দিয়েছেন, তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাখ্যান করেছে।’
বিবৃতিতে ম্যাথিউ মিলার আরও বলেন, ‘এ ধরনের বক্তব্য উসকানিমূলক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন।’ পরে নিজের এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে ম্যাথিউ মিলার আরও বলেন, ‘গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের ব্যাপকভাবে বাস্তুচ্যুত করার কোনো সুযোগ নেই।’
স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা সব সময়ই স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলে এসেছি—গাজা ফিলিস্তিনি ভূমি এবং তা ফিলিস্তিনি ভূমি থাকবে। হামাস আর ভবিষ্যতে এই ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ করবে না এবং কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসরায়েলকে হুমকি দিতে সক্ষম হবে না। ইজরায়েলি ও ফিলিস্তিনিরা পাশাপাশি থাকবে এবং বিশ্বের স্বার্থে আমরা এটাই চাই।’
এর আগে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির ও অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মতরিচসহ কট্টরপন্থী নেতারা গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের ‘স্বেচ্ছায় সরিয়ে নেওয়ার’ আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং বিভিন্ন দেশকে গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত হতে যাওয়া এসব ফিলিস্তিনিকে আশ্রয় দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
অবশ্য এটা শুধু ওই দুই মন্ত্রীর মত নয়। ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার অংশই হলো ফিলিস্তিনিদের তারে ভূখণ্ড থেকে বের দেওয়া। তাদের একাধিক কর্মকর্তার বক্তব্য ও মানসিকতা থেকে এটা স্পষ্ট হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলি সীমান্ত পেরিয়ে হামলা চালানোর পর থেকেই ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে বিমান ও স্থল হামলা শুরু করে। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২২ হাজার ১৮৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে ৫৭ হাজার ৩৫ জন। ইসরায়েলি হামলায় গাজার ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে প্রায় ২ মিলিয়ন বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছে।