ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ লাভজনক, দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ
পিরোজপুরের নাজিরপুরে বিলাঞ্চলের প্রায় ৮০-৯০ ভাগ মানুষ ভাসমান সবজি চাষের সাথে জড়িত। বৈশাখ থেকে অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত এই ভাসমান সবজির চাষ চলে। পূর্বপুরুষের কাছ থেকে দেখে শিখেছেন ভাসমান চাষ পদ্ধতি, বলছিলেন পিরোজপুরের নাজিরপুরের মুগারঝোরের কৃষক ইব্রাহীম। তার বাবা-দাদারা এই চাষাবাদ করে তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনিও ছোটবেলা থেকে এই চাষাবাদের সাথে জড়িত। ইব্রাহীমের মতো পিরোজপুরের নাজিরপুরে বিলাঞ্চলের প্রায় ৮০-৯০ ভাগ মানুষ ভাসমান সবজি চাষের সাথে জড়িত। বৈশাখ থেকে অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত এই ভাসমান সবজির চাষ চলে। পানি শুকিয়ে যাওয়ার পরে অন্যান্য ফসল চাষ হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলার কিছু এলাকা সারা বছরই জোয়ার-ভাটার কারণে জলাবদ্ধ থাকে। যার আয়তনের পরিমাণ প্রায় ২৮০ হেক্টর।
ভৌগলিকভাবে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার দেউলবাড়ী-দোবড়া, কলারদোয়ানিয়া ও মালিখালী পিরোজপুরের নাজিরপুরের দেউলবাড়ি দোবড়া, কলারদোনিয়া, মালিখালী এই তিন ইউনিয়নের কলারদোয়ানিয়া, মুগারঝোর, পদ্মডুবি, মনোহরপুর, দেউলবাড়ী, সোনাপুর, বিলডুমরিয়া নিয়ে গঠিত নাজিরপুরে বিলাঞ্চল।
এ ছাড়া নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের গগন, চামি, ডুবি ও বিন্না এলাকায় নিম্নাঞ্চল নামে পরিচিত। এসব এলাকা সারা বছর ৫-৮ ফুট পানিতে নিমজ্জিত থাকে। তবে বর্ষা মৌসুমে তা বেড়ে ১০ থেকে ১২ ফুট হয়ে থাকে। আর এ কারণে এ অঞ্চলে বহু বছর আগে উদ্ভাবন হয় বিরল ভাসমান চাষ পদ্ধতি। এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান হয়েছে এলাকার কয়েক হাজার কৃষকের।
এর সুবিধা হচ্ছে, ভাসমান পদ্ধতিতে পরিবেশবান্ধব ও জৈব পদ্ধতিতে এ ফসল আবাদ করা হয়। চাষের খরচ তুলনামূলকভাবে খুবই কম। সেচের প্রয়োজন পড়ে না। খুব কম সার ও বালাইনাশক ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন করা যায়। সাধারণত বর্ষার প্রথম সপ্তাহ থেকে ভাসমান সবজি চাষের কাজ শুরু হয়ে যায়। এ সময় আমরা নতুন-পুরাতন সব চাষিকে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। যাতে করে সঠিক নিয়ম-পদ্ধতি প্রয়োগ করে ভাল ফলন পেতে পারেন।