বই কেনার স্থায়ী বিনিযোগ এটি খরচ নয়

বইয়ের পাতায় গল্পে ভ্রমণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫১ PM

আমাদের মধ্যে অনেকেই বইপড়ার সময় বা যথোপযুক্ত কারণ খুঁজে পাই না। কেন বই পড়বো, কোথায় বই পড়বো অনেক ধরণের সিদ্ধান্তহীনতা কাজ করে। বইপড়ার অভ্যাস, পড়ার সুযোগ এবং বই পড়ার উপকারিতা বিষয়ক কিছু টিপস নিচে দেয়া হলো যা আমাদের জন্য অব্যশই কার্যকরী হবে বলে আশা করি

চলুন এখন আমরা জানব বই পড়ার ৩৪টি প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে :

১। মনে রাখতে হবে, বইপড়ার প্রথম এবং সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, বই নিয়ে বসা বা শুরু করা।
২। কোনো বই পড়া আপনি উপভোগ না করলে তা সাথে সাথেই পড়া বাদ দিন।
৩। একটি বই পড়লেই আপনার জীবন বদলে যাবে না, কিন্তু প্রতিদিন পড়ার অভ্যাস গড়লে জীবন বদলে যেতে বাধ্য।

৪। পড়ার জন্য বই পছন্দ করার ক্ষেত্রে, সমসাময়িক বইয়ের থেকে পুরোনো দিনের বইয়ের প্রতি বেশি মনোযোগ দিন।
৫। আপনার কাছে যদি বই পড়ার জন্য সময় নেই বলে মনে হয়, আপনার মোবাইলের স্ক্রীনটাইম দেখুন, নিজেই বুঝতে পারবেন।

৬। বই যেকোনো মাধ্যমের হতে পারে, প্রিন্টেড বই, ই-বুক, অডিও বই। বই পড়াটা গুরুত্বপূর্ণ, মাধ্যম না। 
৭। অনেকগুলো বই পড়লেই যে অনেক কিছু জানা যাবে এরকম নয়, বরং বইটি কতটা আপনার মনে আর মস্তিষ্কে প্রভাব ফেললো সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।

৮। বই পড়ার সময় আপনার ফোন সাইলেন্ট এবং দূরে রাখার চেষ্টা করুন, অনেকক্ষণ মনোযোগ থাকবে।
৯। ভালো বই পড়ুন, সেরা বইগুলো আবার পড়ুন আর যুগান্তকারী বইগুলো অব্যশই সংগ্রহে রাখুন।

১০। আমরা পড়ুয়া হয়ে বই পড়ি না, বই পড়তে পড়তে পড়ুয়া হই।
১১। একটি খারাপ বইয়ের কারণে পড়া ছেড়ে না দিয়ে, বইটি বাদ দিন।

১২। যদি কোনো বই আপনার মনে গভীর দাগ ফেলে, অব্যশই বছরে একবার বা আরও বেশিবার সেই বইটি পড়ুন।
১৩। যে বইগুলো আপনার ভালো লাগেনি, সেগুলো চোখের আড়ালে রাখাই শ্রেয়।

১৪। দ্রুত পড়ার থেকে মনোযোগ দিয়ে পড়ার দিকে ফোকাস করাই ভালো।
১৫। বই সাথে সাথে রাখুন, একটি বইয়ের আর কতই বা ওজন। এমন কিছু স্থান রয়েছে, যেখানে আপনি বই পড়ার অনেক সুন্দর সুযোগ পাবেন।

১৬। অন্যের দ্বারা প্রভাবিত বেশি না হয়ে নিজের পছন্দের বই পড়ুন। সবার পছন্দ আলাদা হবে এটাই স্বাভাবিক।
১৭। কোনো বই শুধু পড়ে গেলে সেটা অনেকটা সিনেমার ট্রেইলার দেখার মত, নোট নিলে, বইটি নিয়ে চিন্তা ভাবনা করলে সেটা পুরো সিনেমা দেখার মত হবে।

১৮। ভালো বই সাধারণত দ্রুত পড়া যায় না, কারণ ভালো বই আপনাকে থামতে বাধ্য করবে, ভাবতে বাধ্য করবে।
১৯। বই পড়ে কিছু শেখা বা জানা জরুরি, মুখস্থ করা কিংবা মনে রাখার চেষ্টা জরুরি নয়। শিখতে পারলে এমনিতেই মনে থাকবে। 

২০। পড়ার অভ্যাস গড়তে চাইলে, প্রতিদিন ৫ মিনিট, ১০ মিনিট, ২০ বা ৩০ মিনিট সময় নির্ধারন করুন। তাহলে সময়ের অজুহাতে বাদ দেয়া হবে না আর।
২১। বই পড়ার সময় নোট নেয়া আর শুধু পড়ে যাওয়ার থেকে ১০ গুন বেশি কার্যকরী।

২২। কোনো বই পড়ার পরে তা যদি আপনার মধ্যে কোনো পরিবর্তন না নিয়ে আসে, তাহলে বইটি ভালো ছিলো না অথবা আপনি শিখতে পারেন নি।
২৩। আপনি একটি বই কিনলেই সেটা ভালো না হলেও পড়তেই হবে এমন চাপ না নেয়াই ভালো।

২৪। যারা বছরে ১০০ এর বেশি বই পড়ে, হয় বইয়ের সাথে তাদের আয় জড়িত (লেখক, প্রকাশক, একাডেমিক) অথবা সে বইয়ের পোকা।
২৫। একই মানুষ কখনো এক বই দুই বার পড়ে না, কারণ দ্বিতীয়বার পড়ার সময় সে বদলে যাওয়া মানুষ।

২৬। বই কেনা বিনিয়োগ, খরচ না।
২৭। লাইব্রেরি তে একটি সাধারণ বইও পড়ে ফেলা যায় কিন্তু আড্ডার মধ্যে একটা অসাধারণ বইও ভালো লাগবে না। বই পড়ার মোটিভেশন এর থেকে বই পড়ার পরিবেশ বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

২৮। যেখানেই যান - সাথে একটি বই রাখুন। পড়ার ইচ্ছা এবং সময় কখন পাবেন, আপনি নিজেও জানেন না।
২৯। একটি বইকে সর্বোচ্চ তিনটি সুযোগ দেয়া যায়, এরপরও যদি ভালো না লাগে, তাহলে সেটা বাদ দেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

৩০। একজন লেখক তার বইয়ের অনেক লাইনে দাগানো, মার্ক করা এবং পুরোনো অবস্থায় দেখতে পছন্দ করেন, নতুন অবস্থায় না।
৩১। বড় বড় মোটা বই মানেই ভালো, আর ছোট বই মানেই মানসম্মত নয়, এই ধারণা ভুল। পৃথিবী বদলে দেয়া অনেক ছোটগল্প রয়েছে।

৩২। চিরন্তন সমস্যার সমাধান চিরন্তন বইতে থাকে, আধুনিক সমস্যার সমাধান আধুনিক বইতে।
৩৩। বইয়ের মাধ্যমে সবথেকে কম সময়ের মধ্যে সবথেকে বেশি অভিজ্ঞতা অর্জন করা সম্ভব।

৩৪। আপনার জন্য বইপড়া শুরু করার সবথেকে ভালো সময় ছিল ১০ বছর আগে, দ্বিতীয় ভালো সময় হচ্ছে 'আজকে'। 


সোর্স : সম্পাদিত ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ