বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ মির্জা ফখরুলের
-1060757.jpg?v=1.1)
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী বলে একটি মহল অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
আজ রবিবার (৬ জুলাই) রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, "মিডিয়ার কিছু অংশ ও কিছু ব্যক্তি বিএনপির সংস্কার সম্পর্কে বিভিন্ন রকম কথা বলছেন, যেগুলো সঠিক নয়। বিএনপির কমিটমেন্ট টু রিফর্মস… এটা নিয়ে কোয়েশন করার কোনো সুযোগ নেই। বিএনপি হচ্ছে সেই দল, ২০১৬ সালে বেগম খালেদা জিয়া ভিশন-২০৩০ তুলে ধরেন, তিনি সংস্কারের কথা বলেছিলেন। তারপর ’২২ সালে ২৭ দফা এবং অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনা করে ’২৩ সালে ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি আমরা দিয়েছি। এটাতে আমরা আন্তরিক বলেই কিন্তু ৩১ দফা নিয়ে সারা দেশে অসংখ্য প্রোগ্রাম করেছি… জনগণের কাছে যাওয়া হয়েছে, সুধী সমাজ, সুশীল সমাজের কাছে যাওয়া হয়েছে… তাদেরকে বলা হয়েছে।"
‘আজকে একটা মহল, একটা চক্র অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী বলে প্রচার করার একটা অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’
১৫ বছরের গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনে বিএনপির শক্ত অবস্থানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের কত কর্মসূচি, কত সমাবেশ, কত লাঠিপেটা আপনারা দেখেছেন, আপনারা কাভার করেছেন। এখন বিএনপিকে নিয়ে এই প্রশ্নটা কেন করে? এটাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছাড়া আমি কি বলব?
মির্জা ফখরুল বলেন, একটা গোষ্ঠী বিএনপিকে মেলাইন করা, তাকে ভুলভাবে চিত্রিত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। কোনো একজন ব্যক্তি বা কয়েকজন ব্যক্তি বা কয়েকটি গোষ্ঠী মিথ্যা প্রচারণা সমানে করে যাবেন আর সেটাতে তারা মনে করবেন জনগণ খুব সাড়া দিচ্ছে। জনগণ সাড়া দিচ্ছে না। জনগণ বলতে গুটিকতক শহুরে লোক নয়, জনগণ বলতে সারা বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের সংস্কার আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান করেছেন। বাকস্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সংগঠন করার স্বাধীনতা, সংসদীয় গণতন্ত্র, এমন কি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা মেনে নিয়ে তিন তিনটা নির্বাচন সব কিছুই বিএনপি…। মুক্ত বাজার অর্থনীতি, অর্থনীতিতে বেসরকারি খাতকে নিয়ে আসা এবং ইমার্জিং টাইগার এই সমস্ত বিশেষণে ভূষিত হয়েছে… সব কিছুই সংস্কারের মাধ্যমে বিএনপির করেছে। এই যে ভিএটি (ভ্যাট) প্রথা, এটা নিয়ে কত কথা আমাদেরকে শুনতে হয়েছে ওই সময়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এসব জিনিসকে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বিএনপি সম্পর্কে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া, তার সম্পর্কে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি করার চেষ্টা… এটাতে লাভ হবে না। কারণ বাংলাদেশের মানুষ বিএনপিকে চেনে, বাংলাদেশের মানুষ বিএনপির সঙ্গে থেকেছে। যা কিছু ভালো অর্জন বিএনপি সেখানে থেকেছে এবং বিএনপি নেতৃত্বে দিয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনকে যারা বিলম্বিত করতে চায়, তারা নিশ্চয়ই গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয়, তারা নিশ্চয়ই জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পক্ষের শক্তি নয়।
জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি, দেশে যাতে পুনরায় কোনো স্বৈরাচারের উৎপত্তি না হয়, উৎপাদন না হয়, ফ্যাসিজমের কোনো উৎপাদনের ব্যবস্থা না থাকে, সেজন্য পৃথিবীর কোনো দেশে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারিত থাকার কোনো নজির নাই। এত সত্ত্বেও আমরা বলেছি, বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের কমিটি, স্ট্যান্ডিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রীর আসনে বহাল থাকবে না।
‘এটার সঙ্গে আমরা বলেছি, প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ-নির্বাহী বিভাগকে কার্যকরভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার স্বার্থে তার কোনো পরিধির মধ্যে অন্য কোনো অর্গান এবং অন্য কোনো বডি সৃষ্টি করে যাতে তার (প্রধানমন্ত্রীর) কর্মকাণ্ডকে ব্যাহত না করে, সেজন্য আমরা এনসিসি জাতীয় কোনো ধারণার সঙ্গে একমত হইনি। এটাই ছিল আমাদের শর্ত।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, আমরা আশা করি একটা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারব। আলাপ-আলোচনা হচ্ছে, তবে দীর্ঘ আলোচনা কাম্য নয়।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করে খুব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো, সাংবিধানিক বিষয়গুলোতে ঐকমত্যে আসা যাবে। আমরা আশাবাদী।