প্রথম দিনে কাঙ্ক্ষিত পর্যটকের দেখা মেলেনি সুন্দরবনে
দীর্ঘ প্রায় তিন মাস পর পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয় বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন। তবে এদিন উল্লেখ করার মতো পর্যটকের দেখা মেলেনি পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনটিতে।
রবিবার (০১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীদের আগমন ঘটেনি সুন্দরবনে। এদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সুন্দরবনের সব থেকে কাছের পর্যটন স্পট করমজল বন্যপ্রাণী ও প্রজনন কেন্দ্রে মাত্র ১১০-১১২ জন দর্শনার্থী এসেছেন।
সুন্দরবনের হারবাড়িয়া ও কটটকা এলাকায়ও দর্শনার্থী নেই বললেই চলে। এমন অবস্থায় ট্রলার ঘাট গুলোতে অলস সময় পার করছেন ট্যুর অপারেটর, টলার শ্রমিকরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আবহাওয়া ভালো হলে বৃদ্ধি পাবে দর্শনার্থীর সংখ্যা।
তবে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় সুন্দরবন সেজেছে নতুন রূপে। প্রাণ প্রকৃতিতে ফিরেছে সজিবতা। বন বিভাগও পর্যটন স্পটগুলোকে সাজিয়েছে দর্শনার্থীদের জন্য। যার ফলে বনের প্রাণ-প্রকৃতির সজিবতায় খুশি বৈরি আবহাওয়ার মধ্যে আসা দর্শনার্থীরা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা এক দর্শনার্থী বলেন, চাঁপাই থেকে এসেছি। অনেকদিন ধরে আমরা চিন্তা করছিলাম সুন্দরবনে আসব। বন্ধ থাকায় আসতে পারিনি। এসে অনেক ভালো লেগেছে।
একই জেলা থেকে আসা মো. আশরাফুল ইসলাম নামের আরেক দর্শনার্থী বলেন, সুন্দরবন দেখে এত ভালো লেগেছে, তা বলে বোঝানো যাবে। আশাকরি আবারও আসব।
এদিকে দর্শনার্থী কম আসায় সারাদিনই অলস সময় কাটিয়েছেন মোংলা ঘাটের ট্রলার ও জালি বোট মালিক-চালকরা। এক ট্রলার চালক বলেন, ট্রলার ও বোট নিয়ে আমরা দর্শনার্থীদের জন্য অপেক্ষায় আছি সকাল থেকে। কিন্তু আজকে দর্শনার্থীর সংখ্যা খুবই কম। তাই অলস সময় কাটাচ্ছি। তবে সামনে হয়ত বাড়বে দর্শনার্থীর সংখ্যা।
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, টানা তিন মাস বন্ধ থাকার সময়ে আমরা পর্যটন স্পটগুলোকে দর্শনার্থীদের জন্য প্রস্তুত করেছি। আজকে প্রথম দিনে সারাদিন বৃষ্টির কারণে তেমন দর্শনার্থী আসতে পারেনি। তারপরও শতাধিক দর্শনার্থী এসেছে। এই সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করেন এই কর্মকর্তা।
জল-স্থলভাগ শুধু জীববৈচিত্র্যেই নয়, মৎস্য সম্পদের আধার। সে কারণে প্রথমে সুন্দরবনের মৎস্যসম্পদ রক্ষায় ইন্ট্রিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানিংয়ের সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছর ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে ২০২২ সাল থেকে মৎস্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে এক মাস বাড়িয়ে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ৩ মাস সময় বৃদ্ধি করে বন মন্ত্রণালয়।