আইফেল টাওয়ার ভেঙে ফেলা নিয়ে যা জানা গেল

প্যারিসের বিখ্যাত লৌহ কাঠামোর স্মৃতিস্তম্ভ আইফেল টাওয়ারকে ২০২৬ সালে ভেঙে ফেলার গুজব সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বজুড়ে ফরাসি ঐতিহ্যপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তবে এই দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং এর উৎস একটি ব্যঙ্গাত্মক সংবাদ। টাওয়ারটির অপারেটিং লিজ শেষ হওয়া, কাঠামোগত দুর্বলতা বা দর্শক কমে যাওয়ার মতো যে কারণগুলো সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, তা কোনোভাবেই সত্য নয়। খবরটি হিন্দুস্তান টাইমস প্রকাশ করেছে।
গুজবটি মূলত ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সালে ট্যাপিওকা টাইমস (Tapioca Times) নামের একটি ব্যঙ্গাত্মক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নিবন্ধ থেকে ছড়িয়ে পড়ে। ওয়েবসাইটটি বিদ্রূপাত্মক বা প্যারোডি কন্টেন্টের জন্য পরিচিত। ওই নিবন্ধে একটি কাল্পনিক মুখপাত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে মজার ছলে বলা হয়েছিল, টাওয়ার দীর্ঘদিন জনপ্রিয় হলেও এখন আর সেখানে কেউ যায় না, তাই আমরা এটি বন্ধ করে দিচ্ছি।
নিবন্ধটিতে এটিকে ভেঙে ওয়াটার স্লাইড বা প্যারিস বার্নিং ম্যান ফেস্টিভ্যাল করার মতো হাস্যকর বিকল্পের কথাও বলা হয়েছিল। এই ব্যঙ্গাত্মক বর্ণনা দ্রুত সামাজিক মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-সহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রায় একই ভাষা ব্যবহার করে ভাইরাল পোস্টে ছড়িয়ে পড়ে।
ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা আইফেল টাওয়ার অপারেটিং কোম্পানি (এসইটিই) জানায়, প্যারিস সিটি বা ফরাসি ঐতিহ্য কর্তৃপক্ষ—কারও পক্ষ থেকেই স্মৃতিস্তম্ভটি ভেঙে ফেলার কোনো পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়নি। এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণও নেই।
উল্লেখ্য বর্তমানে আইফেল টাওয়ার সাময়িকভাবে বন্ধ আছে, যা গুজবকে আরও উসকে দিয়েছে। তবে এই বন্ধ থাকার কারণ কোনো ধ্বংসের পরিকল্পনা নয়, বরং এটি দেশব্যাপী ফরাসি ইউনিয়নগুলোর ধর্মঘটের ফল। সরকারি ব্যয় হ্রাস এবং ধনীদের ওপর উচ্চ করের দাবিতে চলমান এই শ্রমিক ধর্মঘট এসইটিই-এর কর্মীসহ ফ্রান্সজুড়ে অন্যান্য কর্মীদের কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, শ্রম আলোচনা শেষ হলেই টাওয়ারটি শিগগিরই স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরবে।
মিডিয়া বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন যে, ডিজিটাল যুগে এমন ধরনের ব্যঙ্গাত্মক নিবন্ধকে মূল প্রসঙ্গ থেকে বিচ্ছিন্ন করে সত্য হিসেবে প্রচার করার ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।