বিমানবন্দরে আগুন নিভিয়ে ফেরার পথে গাড়ির ধাক্কায় আনসার সদস্যের মৃত্যু

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো ভিলেজে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন এক আনসার সদস্য। বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের দিনই গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) ব্যারাকে ফেরার পথে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিমানবন্দরের র্যাব-১-এর কার্যালয়ের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত বিপুল মিয়ার বাড়ি কুড়িগ্রামে। তিনি বাংলাদেশ আনসারের এপিসি পদে কর্মরত ছিলেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে অংশ নেওয়ার পর ফেরার পথে রাস্তা পার হতে গিয়ে অজ্ঞাতনামা একটি গাড়ির ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
এদিকে বিমানবন্দরের আগুন নিয়ন্ত্রণের সময় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পাঁচজনসহ মোট ২৯ জন আহত হন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
গতকাল সোমবার (২০ অক্টোবর) ডিএমপির বিমানবন্দর জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) পহন চাকমা ও আনসারের ঢাকা মহানগর উত্তর জোন কমান্ডার ডেপুটি ডাইরেক্টর (ডিডি) গোলাম মাওলা তুহিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিমানবন্দর জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) পহন চাকমা বলেন, ‘বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের ৫, আনসারের ২০, পুলিশের ১, ডিএইচএল কুরিয়ার সার্ভিসের ১ এবং ২ জন স্বেচ্ছাসেবকসহ ২৯ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৩ জনকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে, ১৩ জনকে সিএমএইচে এবং ৩ জনকে উইমেন্স হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। অগ্নিকাণ্ডে কেউ নিহত হননি এবং এখন পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় কেউ মারা যাননি।’
অন্যদিকে আনসারের ঢাকা মহানগর উত্তরের জোন কমান্ডার ডিডি গোলাম মাওলা তুহিন বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের দিন আমাদের সব আনসার সদস্য বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালন করেছেন। ওই সময় এপিসি বিপুল মিয়াও ডিউটি করেছেন। বিমানবন্দর থেকে ডিউটি করে ফেরা পথে রাস্তা পারাপারের সময় অজ্ঞাতনামা একটি গাড়ির ধাক্কায় তিনি মারা যান।’
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রসঙ্গে ডিডি তুহিন বলেন, ‘বিপুলের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। তাঁদের পরিবারের কেউ মামলা করতে রাজি ছিলেন না। তাই মামলা করা হয়নি।’
ডিডি আরও বলেন, ‘বিআরটি উড়ালসড়ক থেকে নামার ঢালু জায়গায় বিপুল সড়ক দুর্ঘটনার স্বীকার হোন। সেখান দিয়ে রাস্তা পারাপার ঠিক নয়। কারণ সেখানে দ্রুতগতিতে মহাসড়কে গাড়ি চলাচল করে। না হলে আমরাই ব্যবস্থা নিতাম। কোনো ছাড় দিতাম না।’
নিহত আনসারের এপিসি বিপুলের সহকর্মীরা বলেন, বিপুল মিয়া কার্গো ভিলেজে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে রাত ১০টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছেন। পরে রাতে খাবারের জন্য ব্যারাকে যাওয়ার পথে অজ্ঞাতনামা গাড়ির চাপায় তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে খবর পেয়ে বিপুলের লাশ উদ্ধার করে কুড়িগ্রামে পাঠানো হয়েছে।