জাতীয়করণের আশ্বাসে ইবতেদায়ী শিক্ষকদের কর্মসূচি প্রত্যাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৬ PM

সরকার দেশের সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগ) মাসুদুল হক মঙ্গলবার এক ব্রিফিংয়ে এই ঘোষণা দিয়েছেন।

তিনি জানান, চলতি বছর থেকেই শিক্ষক-শিক্ষিকা সংক্রান্ত অন্যান্য দাবির বাস্তবায়ন শুরু হবে। এছাড়া, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসাগুলোতে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি চালু করার অনুমোদন দেওয়া হবে এবং শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়াও শুরু হবে।

এই ঘোষণার পর, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষকরা তাদের অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে গিয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেন। তবে তারা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, চলতি বছরের জুনের মধ্যে তাদের দাবির পূর্ণ বাস্তবায়ন না হলে, জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে কঠোর কর্মসূচি শুরু হবে।

এর আগে, আন্দোলনকারী শিক্ষকরা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার জাতীয়করণের জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। তারা জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ে দাবি না মানলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

সোমবার, শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থানরত শিক্ষকরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক রুহুল আমিনের মাধ্যমে এই আল্টিমেটাম ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, "অসহায় শিক্ষকদের ওপর টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার কেন? ৫ আগস্টের পর টিয়ার গ্যাসের ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছিল, কিন্তু এখন তা পুনরায় ব্যবহার করা হচ্ছে।"

এদিকে, আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হাফেজ মাওলানা আব্দুল হান্নান হোসেন জানান, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি টিম তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এবং বলেছেন যে, মন্ত্রণালয় থেকে দ্রুত একটি সিদ্ধান্ত আসবে। তবে তিনি সতর্ক করেছেন, যদি আজকের মধ্যে এই বিষয়ে সুরাহা না হয়, তবে বড় আন্দোলনের ডাক দেওয়া হতে পারে।

রোববার, শাহবাগে ৬ দফা দাবিতে অনুষ্ঠিত পদযাত্রা কর্মসূচির সময় পুলিশ লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করায় বেশ কিছু শিক্ষক আহত হন।

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষকদের ৬ দফা দাবি ছিল: ১. ২০০৮ সালের স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার নিবন্ধন স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা। ২. রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত কোডবিহীন মাদরাসাগুলোকে কোড নম্বর প্রদান। ৩. স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার জন্য আলাদা নীতিমালা গঠন। ৪. পাঠদান অনুমতি, স্বীকৃতি, বেতন-ভাতা, নীতিমালা ২০২৫ এর অনুমোদন। ৫. প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো অফিস সহায়ক নিয়োগের ব্যবস্থা। ৬. প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসায় প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি চালু করার অনুমোদন।