কাজের ফাঁকে ঘুমানোর উপকারিতা

দীর্ঘক্ষণ একটানা কাজ করলে মানসিক ও শারীরিক প্রেসার দুইই বাড়ে। তবে বর্তমানে এই বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকেন বিশ্বের বড় বড় কোম্পানি। তারা কর্মস্থলে কর্মীদের ঘুমানোর ব্যবস্থা করছেন। বড় বড় কোম্পানিগুলো এখন কর্মীদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য কর্মস্থলে ঘুমের উপকারিতা নিয়ে ভাবছে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, কাজের মাঝে অল্প কিছুক্ষণের ঘুম (পাওয়ার ন্যাপ) কর্মীদের উৎপাদনশীলতা, সৃজনশীলতা এবং সামগ্রিক সুস্থতা বৃদ্ধি করতে পারে।
গুগল, নাইকি এবং বেন অ্যান্ড জেরির মতো বড় কোম্পানিগুলো ইতোমধ্যে তাদের অফিসে ন্যাপ পড এবং বিশ্রামের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা স্থাপন করেছে, যাতে কর্মীরা ছোট একটি ন্যাপ নিয়ে নতুন শক্তিতে কাজ শুরু করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, মাত্র ২০ থেকে ৩০ মিনিটের একটুখানি ঘুম স্মৃতিশক্তি, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা এবং চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশনের এক গবেষণায় বলা হয়, পাওয়ার ন্যাপ ঘুমের অভাবের নেতিবাচক প্রভাব দূর করতে সাহায্য করে, যা বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ কর্মীকে প্রভাবিত করছে। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির স্লিপ বিজ্ঞানী ড. এমিলি কার্টার বলেন, অনেক কর্মী দুপুরে ক্লান্ত হয়ে পড়েন, যার ফলে তাদের কার্যক্ষমতা কমে যায়। ছোট্ট একটি ন্যাপ সেই ক্লান্তি দূর করতে এবং মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা উন্নত করতে সহায়তা করতে পারে।
কিছু সমালোচক মনে করেন যে, কর্মীদের ঘুমানোর অনুমতি দিলে তা আলস্য সৃষ্টি করবে। তবে, যেসব কোম্পানি ন্যাপ-ফ্রেন্ডলি নীতি গ্রহণ করেছে, তারা এর বিপরীত ফলাফল দেখছে। একটি সাম্প্রতিক জরিপে বলা হয়েছে, যেসব প্রতিষ্ঠানে ন্যাপ প্রোগ্রাম রয়েছে, সেগুলোতে উৎপাদনশীলতা ৩০% বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কর্মীদের সন্তুষ্টি ২৫% বেড়েছে।
বিশ্বব্যাপী কর্মী সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে, ফলে কর্মস্থলে ঘুমানোর ধারণাটি শীঘ্রই বিলাসিতা না হয়ে একটি সাধারণ অভ্যাস হয়ে উঠতে পারে।