প্যারিস অলিম্পিকে প্রশংসা কুড়াচ্ছে মঙ্গোলীয় পোশাক
প্যারিস অলিম্পিকে প্রশংসিত হচ্ছে মঙ্গোলিয়ানদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক। ২০০৮ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সব অলিম্পিকের পোশাক নকশা করে আসছে র্যালফ লরেন ব্র্যান্ড; অন্যদিকে এবার ফ্রান্সের উদ্বোধনী এবং সমাপনী উৎসবের পোশাকের দায়িত্বে ছিল ফরাসি ব্র্যান্ড বেরলুতি।
কিন্তু লুলু লেমন,বেরলুতি বা র্যালফ লরেনের মতো বিশ্ববিখ্যাত ব্র্যান্ডগুলোর পোশাক নিয়ে কোনো মাতামাতি হয়নি। বরং মঙ্গোলীয় সংস্কৃতি ফুটিয়ে তোলা নিপুণ এম্ব্রয়ডারির ভেস্ট আর ঐতিহ্যবাহী অ্যাকসেসরিজে ইন্টারনেটে ঝড় তুলেছে মঙ্গোলীয়রা। প্যারিস অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মঙ্গোলীয় প্রতিযোগীদের পোশাকের নকশা নিয়েই মেতে রয়েছে সবাই।
এই পোশাকের নেপথ্যে রয়েছে উলানবাটর-ভিত্তিক ফ্যাশন প্রতিষ্ঠান মাইকেল অ্যান্ড অ্যামাজোনকা, যেখানে মঙ্গোলিয়ান ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির নির্যাস ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
ঝলমলে এক ফটো সিরিজের মাধ্যমে নকশার পেছনের গল্প তুলে ধরেছে প্রতিষ্ঠানটি। শুধু পোশাকই নয়, অ্যাকসেসরিজের নকশাও করেছেন তারা। নারী অ্যাথলেটদের জন্য ছিল উৎসবে পরার উপযোগী কানের দুল আর এম্ব্রয়ডারি করা বটুয়া ব্যাগ। পতাকা উত্তোলনকারী পুরুষ অ্যাথলেটদের পোশাকের অনুষঙ্গ হিসেবে ছিল আর্চারি হ্যাট, বেল্ট, আর ঐতিহ্যবাহী মঙ্গোলিয়ান বুট।
সাদা, নীল আর লাল মূলত এই তিন রঙের আধিক্য ছিল পোশাকজুড়ে। ঐতিহ্যবাহী প্যাটার্ন আর মোটিফগুলোর মধ্যে মঙ্গোলীয় পতাকার ‘সোয়োমবো’ প্রতীকটিও ছিল। আরও ছিল প্যারিস শহর, অলিম্পিক মশাল, আইফেল টাওয়ার প্রভৃতির মোটিফ।
মঙ্গোলিয়ান জাতীয় অলিম্পিক কমিটি জানিয়েছে, প্রতিটি পোশাক তৈরিতে গড়ে ২০ ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে।
মঙ্গোলীয়দের এই অলিম্পিক ইউনিফর্ম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, বিশেষ করে টিকটকে ভূয়সী প্রশংসা পেয়েছে। ‘শুরুর আগেই অলিম্পিক জিতে নিয়েছেন তারা,’ স্টাইল বিষয়ক লেখক রায়ান ইপ এভাবেই এক ভিডিওতে ঘোষণা দিয়েছেন। ভিডিওটিতে ইতিমধ্যে ২ মিলিয়নের বেশি ভিউ হয়েছে।
আরেক ভিডিওতে এক অস্ট্রেলিয়ান ব্যবহারকারী বলেন, ‘তাদের পোশাকের সূক্ষ্ম কারুকাজগুলো অনেক বেশি সুন্দর ছিল…এটি যে গভীর ভাবনার ফসল, তা একেবারে স্পষ্ট।’
ব্র্যান্ডটির ইনস্টাগ্রাম পেজেও মানুষ প্রশংসায় ভাসিয়েছে। একটি কমেন্টে লেখা ছিল, ‘এখন পর্যন্ত দেখা সবচেয়ে সুন্দর আউটফিট।’ ‘কী নিঁখুত আর সুনিপুণ নকশা’, লেখেন আরেকজন।
এবারই প্রথম নয়,মাইকেল কোইগালা এবং অ্যামাজোনকা কোইগালার প্রতিষ্ঠিত ‘মাইকেল অ্যান্ড অ্যামাজোনকা’ আগেও মঙ্গোলীয় দলের জন্য পোশাকের নকশা করেছিল। ২০২২ সালে বেইজিংয়ে উইন্টার অলিম্পিকস আর ২০২০ সালে টোকিওতে সামার অলিম্পিকসের পোশাকের নকশাকার তারাই ছিলেন।
১৯৬৪ সাল থেকে একটিমাত্র সামার অলিম্পিকস ব্যতীত সব ক’টি অলিম্পিকসে অংশ নিয়েছে মঙ্গোলিয়া। তবে দেশটি স্বর্ণ জিতেছে কেবল একবার- ২০০৮ সালে জুডো ও বক্সিংয়ে।
২৬ জুলাই থেকে শুরু হওয়া প্যারিস অলিম্পিকে ৩০ জনেরও বেশি ক্রীড়াবিদ পাঠিয়েছে দেশটি। সাইক্লিং, শুটিং এবং রেসলিং-সহ নয়টি ভিন্ন খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তারা।
সূত্র: সিএনএন, টাইমস অব ইন্ডিয়া