প্রথমবারের মতো মহাকাশে চালু হতে যাচ্ছে রেস্তোরাঁ
পাহাড়ের গায়ে, বরফের মাঝে, পানির নিচে রেস্তোরাঁর নাম হয়তো শুনেছেন। কিন্তু কখনো শুনেছেন মহাকাশে রেস্তোরাঁর কথা? নিউইয়র্কের ‘স্পেসভিআইপি’ নামের একটি পর্যটন সংস্থা ২০২৫ সালের মধ্যে মহাকাশে প্রথম রেস্তোরাঁ চালুর ঘোষণা দিয়েছে।
গতকাল সোমবার (১৮ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিজনেস টুডে। এছাড়া আনন্দবাজার পত্রিকার খবরেও একই তথ্য জানানো হয়েছে।
আনন্দবাজার জানিয়েছে, ভূপৃষ্ঠ থেকে এক লাখ ফুট উচ্চতায় তৈরি করা হচ্ছে রেস্তোঁরাটি। এতে আপাতত ছ’জন অতিথির জন্য টেবিল থাকছে। চারপাশে থাকছে বড় বড় জানালা। সেখানে বসে সূর্যোদয় দেখতে দেখতে খাবার উপভোগ করতে পারবেন অতিথিরা। নীচে থাকবে সাদা-নীল বর্ণের পৃথিবী।
‘স্পেসভিআইপি’ তাদের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে রেস্তোরাঁর বেশ কিছু ছবি শেয়ার করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, রেস্তোরাঁটি দেখতে হবে অনেকটা বেলুনের মতো। ছ’ঘণ্টার জন্য সেই হাইটেক স্পেস-বেলুনে মহাকাশ-সফরে নিয়ে যাওয়া হবে অতিথিদের। মাথাপিছু খরচ হবে প্রায় ৫ লাখ ডলার (প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা)। থাকবে ওয়াইফাই সেবা। ফলে কেউ চাইলে মহাকাশ থেকেই লাইভস্ট্রিম করতে পারবেন, বন্ধুদের সঙ্গে কিংবা পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন।
বিশ্বের অন্যতম সেরা ড্যানিশ রেস্তোরাঁ ‘অ্যালকেমিস্ট’-এর শেফ রাসমুস মাঙ্ক এই রেস্তোরাটির খাবারের মেনু তৈরি করছেন। এখনও মেনু চূড়ান্ত না হলেও ৩২ বছর বয়সী এই শেফ জানিয়েছেন, বিস্ময়ে ভরা ওই মহাকাশ সফরের মতো মেনুতেও স্বাদে-গন্ধে চমক থাকবে। মাঙ্ক জানিয়েছেন, খরচ অনেকটাই বেশি, তবু মানুষের মধ্যে প্রবল উৎসাহ রয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে আরও অনেক সফর হবে। তখন টিকিটের দাম ধীরে ধীরে কমবে। আরও বেশি মানুষ এই অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে পারবেন।
‘স্পেসভিআইপি’ জানিয়েছে, তাদের এই ঘোষণা দেয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বুকিং সংক্রান্ত অসংখ্য প্রশ্ন আসতে শুরু করেছে। অনেকেই জানতে চাইছেন, এই সফরে নাম লেখাতে চাইলে কোথায় সাইন আপ করতে হবে। ‘স্পেসভিআইপি’ এর প্রতিষ্ঠাতা রোমান চিপোরুখা বলেন, ‘ইতিমধ্যে কয়েক ডজন আবেদন জমা পড়েছে আমাদের কাছে। সকলেই খুবই উৎসাহী। কিন্তু আমাদের কাছে মাত্র ছ’টি আসন রয়েছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে যাত্রী-তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।’
মহাকাশে ভাসমান বেলুন-রেস্তোরাঁটি নির্মাণ করেছে ‘স্পেস পারসপেকটিভস’। অতিথিদের কোনও বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে হবে না এখানে যেতে। একটি স্পেস বেলুনের সাহায্যে এক ধরনের ক্যাপসুলে বসিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে যাত্রীদের। প্রযুক্তিটির পেছনে রয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। আগামী মাস থেকে এর পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরু হবে।