যে ৩ অভ্যাস আপনার ডায়াবেটিস বাড়াতে সহায়তা করে
![স্বাস্থ্য পরামর্শ](https://citizenjournal24.com/resources/img/article/202312/93740_151.jpg?v=1.1)
আপনি কি এমন কিছু করছেন যা ডায়াবেটিসের কারণ হতে পারে? প্রতিদিনের কিছু দৈনিক অভ্যাস পরিবর্তন করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। গত তিন দশকে সারা বিশ্বে ডায়াবেটিস ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং কিডনি বিকল হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। ডায়াবেটিস হল একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ। যখন অগ্ন্যাশয় পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি করে না বা যখন শরীর কার্যকরভাবে উৎপন্ন ইনসুলিন ব্যবহার করতে পারে না তখন এই রোগ দেখা দেয়।
ইনসুলিন একটি হরমোন যা রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করে। বয়স এবং জেনেটিক্স ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে, তবে আমাদের জীবনযাপনের ধরনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব এবং মানসিক চাপ, নিষ্ক্রিয় জীবনযাপন গত কয়েক বছরে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা তীব্রভাবে বৃদ্ধি করেছে। জেনে নিন কোন ৩ অভ্যাস ডায়াবেটিস বাড়াতে কাজ করে-
১. নিষ্ক্রিয় জীবনযাপন
নিষ্ক্রিয় বা অলস জীবনযাপন টাইপ ২ ডায়াবেটিসের জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকির কারণগুলোর মধ্যে একটি। দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকতে হয় এমন কাজ করলে এই ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। নিয়মিত ব্যায়াম না করলে অতিরিক্ত শর্করা শক্তির জন্য পেশীতে যাওয়ার পরিবর্তে রক্তের প্রবাহে থেকে যায়, ইনসুলিনের প্রতি শরীরের প্রতিক্রিয়া ব্যাহত করে এবং শরীরকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে উচ্চ রক্তে শর্করার সমস্যায় ফেলে। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের চর্বি কমে, রক্তচাপ কমে এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে আসে। ফলে ডায়াবেটিস পরিচালনা সহজ হয়। নিয়মিত ব্যায়াম পেশী, লিভার এবং চর্বি কোষে শর্করার শোষণ বাড়ায়। প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১৫০ মিনিট ব্যায়াম এবং শারীরিক কার্যকলাপ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রতিদিন হাঁটা, সিঁড়ি ভাঙা এবং একটানা বসে না থেকে কিছুক্ষণ পরপর উঠে বিরতি নেওয়ার মতো ছোট পরিবর্তনগুলো আপনার শারীরিক কার্যকলাপের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।
২. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
প্রয়োজনীয় দানা শস্য না খাওয়া, পরিশোধিত চাল এবং গমের অতিরিক্ত ব্যবহার এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। আল্ট্রা-প্রক্রিয়াজাত খাবার (যা জাঙ্ক ফুড নামেও পরিচিত) সব জায়গায় রয়েছে। এই খাবারগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রক্রিয়াজাত এবং প্রস্তুতকৃত স্ন্যাক, যাতে ক্যালোরি বেশি কিন্তু পুষ্টির মান কম থাকে। এই খাবারগুলোতে থাকা অতিরিক্ত চিনি এবং ফ্যাট ওজন বৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারে। এই অতিরিক্ত ওজন ডায়াবেটিসের সঙ্গে জড়িত। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠি হলো সঠিক খাদ্য ব্যবস্থাপনা।
৩. অপর্যাপ্ত ঘুম এবং স্ট্রেস
স্ট্রেস ডায়াবেটিসের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয়, তবে এটি ডায়াবেটিসে অবদান রাখতে পারে। স্ট্রেসের সময় শরীর কর্টিসোল নামে একটি স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ করে, যা ইনসুলিন কার্যকলাপের বিরোধী। স্ট্রেস হরমোন রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। তাই এটি নিয়ন্ত্রণ করতে আরও ইনসুলিন বা ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে। রাতে দেরি করে ঘুমানো এখন অনেকের ক্ষেত্রেই সাধারণ অভ্যাসে পরিণত হয়েছে, যা তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। অপর্যাপ্ত ঘুম ক্ষুধা নিয়ন্ত্রিত হরমোনগুলোতে ভারসাম্যহীনতা তৈরি কররে, তাই বেশি রাত পর্যন্ত জেগে থাকলে আপনি ক্ষুধার্ত বোধ করেন। ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার এবং ওজন বাড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই প্রতিদিন আগেভাগে ঘুমাতে যান এবং সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়ুন।