ইসলামের দৃষ্টিতে
প্রয়োজনীয় কথা সুন্দরভাবে বলুন
আমরা সামাজিক জীব। সমাজে বসবাসের ক্ষেত্রে নানা প্রয়োজনে একে অন্যের সঙ্গে কথা বলতে হয়। তাই তো সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব মানুষের কথা বলার ধরন কেমন হবে আর কোথায়, কখন, কিভাবে কথা বলতে হবে তার সবই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব মহানবী (সা.) নিজ উম্মতকে শিক্ষা দিয়ে গিয়েছেন। আজ আমরা একজন মুমিনের কথা বলার আদব নিয়ে কিঞ্চিৎ আলোকপাতের চেষ্টা করব, ইনশাআল্লাহ।
এক. সালাম দিয়ে কথা শুরু করা : সালামের গুরুত্ব অপরিসীম। নবী (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে প্রথমে সালাম দেয়।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৫১৯৭)
সালামের মাধ্যমে পরস্পরে হৃদ্যতা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধি পায়। নবী (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কি এমন একটি বিষয়ের কথা বলব, যা করলে তোমাদের পরস্পরে ভালোবাসা সৃষ্টি হবে? তোমরা পরস্পরের মধ্যে সালামের ব্যাপক প্রসার ঘটাও।’ (মুসলিম, হাদিস : ৫৪)
দুই. আওয়াজ নিয়ন্ত্রণে রেখে কথা বলা : কথা এমন পর্যায়ের আওয়াজে হওয়া উচিত নয় যে তা অন্যের বিরক্তির কারণ হয়। আবার এত ক্ষীণও যেন না হয় যে অন্য একজনের তা শুনতে অসুবিধা হয়; বরং স্থান-কাল-পাত্র বিবেচনায় মধ্যম পন্থা অবলম্বন করে কথা বলা উচিত। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি পদচারণে মধ্যপন্থা অবলম্বন করো এবং তোমার কণ্ঠস্বর নিচু করো। নিশ্চয়ই সবচেয়ে বিকট স্বর হলো গাধার কণ্ঠস্বর।’ (সুরা : লুকমান, আয়াত : ১৯)
তিন. অহেতুক কথা বলা থেকে বিরত
থাকা : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষের উচ্চারিত প্রতিটি কথা আল্লাহর দরবারে সংরক্ষিত হয়।’(সুরা : ক্বাফ, আয়াত : ১৮)
সুতরাং আমাদের উচিত সব ধরনের অহেতুক ও অশালীন কথা থেকে বিরত থেকে নিজ আমলনামা পরিশুদ্ধ রাখতে সচেষ্ট হওয়া।
চার. কোনো কথা সত্য যাচাই করে কথা বলা : কোনো কথা শোনার পর তার সত্যতা যাচাই না করে বলে বেড়ানো উচিত নয়। কেননা এতে মিথ্যাবাদী হওয়ার সমূহ আশঙ্কা থেকে যায়। নবী (সা.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে সে যা শুনে তা-ই বলে বেড়ায়।’ (মুসলিম, হাদিস : ৫)