সালমান শাহ হত্যা মামলা: সামিরা-ডনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী সামিরা হক ও খলনায়ক আশরাফুল হক ডনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার পুলিশ পরিদর্শক আতিকুল আলম খন্দকারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজ্জামান এই আদেশ দেন। ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগের এডিসি (প্রশাসন) নাসির আহম্মেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনে বলা হয়, সামিরা হক ও খলনায়ক ডন পলাতক আসামি। তাদের যেকোনো সময় বিদেশে যেতে পারার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি তারা বিদেশ চলে যান, মামলার বাদী সুবিচার থেকে বঞ্চিত হবেন এবং তদন্তে ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে। তাই আদালত তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য ‘স্টপ লিস্ট’-এ অন্তর্ভুক্ত করার অনুমতি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান। এ ঘটনায় তার বাবা প্রয়াত কমরউদ্দীন আহম্মদ চৌধুরী অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন। পরে ১৯৯৭ সালে হত্যার অভিযোগ এনে মামলাটিকে হত্যা মামলায় রূপান্তরের আবেদন করেন।
সিআইডির তদন্তে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহের মৃত্যু আত্মহত্যা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তবে তার বাবা প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে রিভিশন মামলা দায়ের করেন। সবশেষ ২০ অক্টোবর ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক বাদীপক্ষের রিভিশন মঞ্জুর করে মামলাটিকে হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এরপর ২১ অক্টোবর রমনা থানায় সালমান শাহর মামা মোহাম্মদ আলমগীর মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় সামিরা হকসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন— শিল্পপতি ও প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, লতিফা হক লুছি, খলনায়ক ডন, ডেবিট, জাভেদ, ফারুক, মে-ফেয়ার বিউটি সেন্টারের রুবি, আব্দুস ছাত্তার, সাজু এবং রেজভি আহমেদ ফরহাদ। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে।
মোহাম্মদ আলমগীর অভিযোগ করেন, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমানের শয়নকক্ষে তার গলায় দড়ির দাগ ও মুখ-পা নীলচে হয়ে পড়ে থাকা অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, সালমান শাহ অনেক আগেই মারা গেছেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, সালমানের বাবা মৃত্যুর আগে ছেলের মৃত্যু হত্যা বলে সন্দেহ করায় ১৯৯৭ সালে রমনা থানায় অপমৃত্যু মামলাকে হত্যা মামলায় রূপান্তরের আবেদন করেন। সালমানের বাবার মৃত্যুর পর মামলাটি তার ভাইপো আলমগীর পরিচালনা করছেন। মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে কেউ মৃত্যুবরণ করলে প্রমাণ সাপেক্ষে তারা দায়মুক্তি পাবেন।