গাজায় 'গণহত্যা' নিয়ে মন্তব্য করে চাকরি হারালেন নিউইয়র্ক হাসপাতালের নার্স
গত প্রায় ৮ মাস ধরে ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজায় নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। এই হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ। তবে প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধড়পাকড় ও ঘৃণ্য পদক্ষেপ নিচ্ছে ইসরায়েলের গণহত্যায় সমর্থনকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গাজা যুদ্ধে ইসরায়েল ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে, এমন মন্তব্য করে চাকরি হারালেন নিউইয়র্কের হাসপাতালে কর্মরত একজন ফিলিস্তিনি-আমেরিকান মুসলিম নার্স। খবর রয়টার্স ও গার্ডিয়ানের।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চাকরি হারানো হাসেন জাবের নামের ওই নার্স গর্ভাবস্থা ও প্রসবের সময় সন্তান হারানো শোকার্ত মায়েদের নিয়ে কাজ করেন। এই কাজের জন্য স্বীকৃতি হিসেবে পুরস্কার গ্রহণ করতে গিয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই তিনি গাজার ‘গণহত্যা’ নিয়ে কথা বলেন।
এই নিয়ে বৃহস্পতিবার এনওয়াইইউ ল্যাংগোন হেলথ হাসপাতালের একজন মুখপাত্র বলেছেন, এই বিষয়ে কথা না বলতে নার্স জাবেরকে আগেই সতর্ক করা হয়েছিল।
জাবের ইন্সটাগ্রামে এক পোস্টে জানান, গত ৭ মে তাকে পুরস্কার দেওয়া হয়। তখন তিনি বক্তব্য দিয়েছিলেন। এরপরই তাকে বরখাস্তের চিঠি ধরিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জাবের তার বক্তব্যে গাজার সন্তান হারানো শোকার্ত মায়ের আর্তনাদের কথা তুলে ধরেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এই পুরস্কার তার কাছে ‘খুবই ব্যক্তিগত’ গুরুত্ব বহন করে। তিনি বলেন, গাজায় চলমান গণহত্যার প্রসঙ্গ টেনে বলেছিলেন- ‘এই নির্মমতা আমাকে প্রচণ্ড কষ্ট দেয়’।
এক ইমেইল বার্তায় হাসপাতালটির মুখপাত্র জানিয়েছেন, কর্মক্ষেত্রে এই ‘বিভাজনমূলক এবং বিচারাধীন বিষয়ে’ যেন কথা না বলেন, সে জন্য গত ডিসেম্বরে নার্স হাসেন জাবেরকে সতর্ক করা হয়েছেল। জাবের কর্মীদের মূল্যায়নের একটি অনুষ্ঠানকে বেছে নেন, যেখানে তার অনেক সহকর্মী উপস্থিত ছিল এবং তাদের মধ্যে কেউ কেউ তার মন্তব্যে মর্মাহতও হয়েছেন। তাই জাবেরকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজায় নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের নৃশংস হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৬ হাজার ২৮৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে নারী রয়েছেন ১০ হাজারের অধিক। আর শিশুর সংখ্যা ১৭ হাজারের বেশি। এছাড়া আহত হয়েছেন ৮২ হাজারের অধিক ফিলিস্তিনি। ধ্বংস হয়েছে গাজার ৭০ শতাংশের অধিক স্থাপন, যা পুনর্গঠন করতে ১৪ বছরের অধিক সময় লাগবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
সূত্র: গার্ডিয়ান, রয়টার্স, আল জাজিরা