জার্মানিতে হাতি পাঠানোর হুমকি বতসোয়ানার

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক জার্নাল আন্তর্জাতিক জার্নাল
প্রকাশিত: ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৮ PM

দক্ষিণ আফ্রিকার হীরা সমৃদ্ধ দেশ বতসোয়ানা। দেশটি জার্মানিতে ২০ হাজার হাতি পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। ‘হান্টিং ট্রফি’ আমদানির ওপর জার্মানির কড়াকড়ি পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে এই হুমকি দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।

গতকাল বুধবার (৩ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

বিবিসি জানায়, বতসোয়ানার হান্টিং ট্রফি হলো কোনো বন্যপ্রাণীকে গুলি করে হত্যার পর এর মাথা কিংবা চামড়া ট্রফি বানিয়ে ঘরে সাজিয়ে রাখা। চলতি বছরের শুরুতে এমন ট্রফি আমদানির ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা উচিত বলে জানায় জার্মানির পরিবেশ মন্ত্রণালয়।

বতসোয়ানায় শিকারিরা সাধারণত বন্যপ্রাণীর মাথা, চামড়া, শিং ও দাঁত সংগ্রহ করে নিজেদের বীরত্ব ও সফলতার প্রতীক হিসেবে প্রদর্শন করে থাকে। প্রাণী অধিকার সংগঠনগুলোর মতে, বন্যপ্রাণীদের গুলি করে হত্যা করা এবং এরপর এর মাথা কিংবা চামড়া ট্রফি বানানো অত্যন্ত নিমর্ম। এমন চর্চা নিষিদ্ধ হওয়া উচিত।

বিশ্বের মোট হাতির এক-তৃতীয়াংশের বাস বতসোয়ানায়। সংখ্যার হিসাবে যা ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি। হাতির পাল প্রায় সময় লোকালয়ে ঢুকে সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি করে, কৃষকদের ফসল খেয়ে ফেলে। এমনকি অনেক সময় হাতির পায়ের নিচে পড়ে মানুষও মারা যায়। এসব কারণে দেশটিতে ট্রফি হান্টিং বেশি হয়। 

বতসোয়ানার প্রেসিডেন্ট মোকউইৎসি মাসিসি জার্মানির বিল্ড পত্রিকাকে জানান, হান্টিং ট্রফি আমদানিতে জার্মানির কঠোর বিধিনিষেধ কেবল বতসোয়ানার মানুষকে দারিদ্র্যের মুখে ঠেলে দেবে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রচেষ্টার কারণে বতসোয়ানায় হাতির সংখ্যা বেড়ে গেছে। শিকার করা হলে এই প্রাণীদের সংখ্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে।

প্রেসিডেন্ট মাসিসি বলেন, ‘জার্মানি যেভাবে আমাদেরকে বন্যপ্রাণীর সঙ্গে থাকতে বলে, তাদেরও সেভাবে বাস করা উচিত। এটি কোনো মজার বিষয় নয়।’

সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এর আগে প্রতিবেশী দেশ অ্যাঙ্গোলায় ৮ হাজার হাতি উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে বতসোয়ানা। এছাড়া মোজাম্বিককে কয়েক শ হাতি উপহার দেওয়ার প্রস্তাব করেছে দেশটি। জার্মানিকেও এমন উপহার দিতে চান বলে মন্তব্য করেন বতসোয়ানার প্রেসিডেন্ট।

২০১৪ সালে বতসোয়ানায় হান্টিং ট্রফির চর্চা নিষিদ্ধ করা হলেও স্থানীয় সম্প্রদায়ের কাছ থেকে আসা চাপের মুখে ২০১৯ সালে আবার তা চালু করা হয়। এখন দেশটিতে বার্ষিক হাতি শিকারের কোটা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এতে বেশ কিছু মানুষের কর্মসংস্থান হয় এবং এটি আয়ের একটি উৎস বলে মনে করা হয়।