দুর্ভিক্ষের কবলে পড়তে যাচ্ছে গাজার কয়েক লাখ মানুষ
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজায় ব্যাপক সামরিক হামলা চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। পাশাপামি গাজার ২২ লাখ মানুষের খাদ্য সহায়তা ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিচ্ছে দেশটির সামরিক বাহিনী। ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা এবং ত্রাণ পৌঁছাতে বাধা দেওয়ার কারণে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার অন্তত পাঁচ লাখ ৭৬ হাজার মানুষ বা মোট জনগোষ্ঠীর এক-চতুর্থাংশ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সবশেষ বৈঠকে সংস্থাটির এক জ্যেষ্ঠ ত্রাণ কর্মকর্তা এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন। লন্ডনভিত্তিক বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।
জাতিসংঘের মানবিক উদ্যোগ সমন্বয় কার্যালয়ের সমন্বয় পরিচালক রমেশ রাজাসিংঘাম বলেন, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় প্রায় পাঁচ মাস ধরে সহিংসতা অব্যাহত থাকলেও তা বন্ধে তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। দক্ষিণ গাজার জনবহুল এলাকাগুলোতে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। এ কারণে আমরা আবারও যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে আরও জানান, গাজার দুই বছরের কমবয়সী প্রতি ছয় শিশুর একজন অপুষ্টিতে ভুগছে। তারা মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। গাজার ২৩ লাখ ফিলিস্তিনির সবাই প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য খাবার খেয়ে বেঁচে আছেন। কেননা উপত্যকাটিতে জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থার ন্যূনতম ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিতেও বাধাবিপত্তির মুখে পড়তে হচ্ছে।
জাতিসংঘের সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির উপনির্বাহী পরিচালক কার্ল স্কাউ গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, যদি অবস্থার পরিবর্তন না হয়, তাহলে গাজায় দুর্ভিক্ষ আসন্ন।
অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছে। তারা বলেছে, ত্রাণ না পৌঁছালে তীব্র দুর্ভিক্ষের কারণে কয়েক দিনের মধ্যেই গাজার হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
এদিকে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় প্রতিদিন গাজায় লাশের সারি বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় উপত্যকাটিতে আরও অন্তত ৭৬ জন মারা গেছেন। এতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৯ হাজার ৯৫৪ জনে পৌঁছেছে। এ ছাড়া গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েল সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ৭০ হাজার ৩২৫ জন আহত হয়েছেন।