গাজায় ‘গণহত্যা’র প্রতিবাদে গায়ে আগুন দেওয়া সেই মার্কিন সেনা মারা গেছেন
ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজায় চলমান ‘গণহত্যার’ প্রতিবাদে ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে নিজের শরীরে আগুন দিয়েছিলেন এক মার্কিন বিমানসেনা। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিলেও অবশেষে মারা গেছেন মার্কিন ওই বিমানসেনা।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আগুন দেওয়ার সময় ইন্টারনেটে সরাসরি সম্প্রচারিত একটি ভিডিওতে সামরিক পোশাক পরা মার্কিন বিমান বাহিনীর ওই সদস্য বলেন- আমি আর গণহত্যার সঙ্গে নিজেকে জড়িত রাখতে চাই না।
এরপর তিনি এক ধরনের স্বচ্ছ তরল জিনিস নিজের গায়ে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় তিনি ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ বলে চিৎকার করতে থাকেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে স্থানীয় সময় গত রবিবার বিকালে এই ঘটনা ঘটে। ওই সেনাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সেখানকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সোমবার তিনি মারা যান।
বিমানবাহিনীর ওই সদস্য ২৫ বছর বয়সী অ্যারন বুশনেল বলে জানা গেছে। তিনি টেক্সাসের বাসিন্দা। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় আগ্রাসন শুরু করে ইহুদিবাদী ইসরায়েল। এরপর থেকে দীর্ঘ সাড়ে মাসেরও বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ ওই উপত্যাকায় নির্বিচারে মানুষ হত্যা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রায় ৩০,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছে আরও প্রায় ৭০ হাজার ফিলিস্তিনি।
গাজায় ইসরায়েলের এই বর্বরতা এরই মধ্যে বিশ্বব্যাপী ‘গণহত্যা’ হিসেবে আখ্যা পেয়েছে। এই গণহত্যার বিরুদ্ধে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে গণহত্যার মামলা দায়ের করে দক্ষিণ আফ্রিকা। বর্তমানেজাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে এ মামলা চলমান।
এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতির জন্য ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু তারপরও কোনও কিছুরই তোয়াক্কা করছে না ইহুদিবাদী দেশটি। আর তাদের জোরালো সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
সূত্র: দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস, দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি, সিএনএন