আজ ফিলিস্তিন ইস্যুতে আন্তর্জাতিক আদালতের শুনানিতে অংশ নেবে বাংলাদেশ
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বিগত ছয় দশক (৫৭ বছর) ধরে ইসরায়েল যে দখলদারিত্ব চালিয়ে আসছে, তা নিয়ে শুনানি শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস-আইসিজে)। আজ মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এই শুনানিতে অংশ নেবে বাংলাদেশ। মোট ৫২টি দেশ এবং ৩টি আন্তর্জাতিক সংস্থা এই শুনানিতে অংশ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
গতকাল সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে অবস্থিত জাতিসংঘের সর্বোচ্চ এই আদালতে শুনানি শুরু হয়। চলবে আগামী এক সপ্তাহ।
আইসিজের ১৫ বিচারপতি প্যানেলের সব সদস্যের উপস্থিতিতে শুরু হয় এ শুনানি। ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল মালিকিও এজলাসে হাজির হয়েছেন। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কারও উপস্থিতি দেখা যায়নি। চীন, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ ১১টি দেশ শুনানিতে অংশ নেবে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে আইসিজেতে এই শুনানি শুরু হয়েছে। ২০২২ সালে আইসিজের প্রতি এই শুনানির আহ্বান জানিয়েছিল সাধারণ পরিষদ।
শুনানি শেষে একটি মতামত বা নির্দেশনা দেবেন আইসিজে। ধারণা করা হচ্ছে, আইসিজের এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা আসতে আনুমানিক ছয় মাস সময় লাগতে পারে।
ইসরায়েল আইসিজের এই শুনানিতে অংশ নিচ্ছে না। তবে লিখিত পর্যবেক্ষণ পাঠিয়েছে। সপ্তাহ ধরে ধাপে ধাপে এই শুনানি হবে।
এদিকে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় অমানবিক ও নৃশংস হামলা শুরু করে দখলদার ইসরায়েল। তাদের বর্বর এই হামলায় উপত্যকাটিতে নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৯ হাজার। আহত হয়েছেন আরও ৬৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
গাজায় চালানো ইসরায়েলের এই বর্বরতাকে গণহত্যা উল্লেখ করে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর আইসিজে'তে মামলা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এই মামলার প্রাথমিক শুনানিতে আইসিজে গাজায় গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানালেও যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে কোন রায় দেয়নি। ফলে আন্তর্জাতিক আদালতের এই রায় ইসরায়েলের পক্ষেই হয়েছে বলে মত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের।
এদিকে, আইসিজের এই রায়ের পর আরও ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে দখলদার দেশটি। গাজা উত্তর, দক্ষিণ শেষে এবার রাফায় স্থল ও আকাশ হামলার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, রাফায় হামলা না চালানো মানে যুদ্ধে পরাজিত হওয়া।
এছাড়া বন্দী ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি না দিলে রমজানেও গাজায় হামলা চালানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। দেশটির যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গান্তজ এ হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি বলেন, জিম্মি ব্যক্তিরা রমজান শুরুর আগে ইসরায়েলে না ফিরলে রাফাসহ গাজার সব জায়গায় লড়াই চলবে। হামাসের সামনে একটিই পথ খোলা। তারা আত্মসমর্পণ করতে পারে, জিম্মিদের মুক্তি দিতে পারে। তাহলেই তারা রমজানে রোজা পালন করতে পারবেন।