গাজায় গণহত্যা হচ্ছে; আনাদোলুকে শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা সব সময় গণহত্যার বিপক্ষে ছিলাম। গাজাতে যা হচ্ছে আমার মনে হয় এটি গণহত্যা।’
গতকাল শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) তুরস্কের বার্তা সংস্থা বার্তা আনাদোলু এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্স (এমএসসি) ২০২৪-এ অংশ নিতে বর্তমানে জার্মানিতে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই তিনি এ সাক্ষাৎকার দেন।
আনাদোলু এজেন্সিকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সব সময় গণহত্যার বিপক্ষে ছিলাম। গাজাতে যা হচ্ছে আমার মনে হয় এটি গণহত্যা। আমরা কখনো এটি সমর্থন করি না।’
তিনি বলেন, ‘গাজার মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার আছে। যা হচ্ছে তা খুব মর্মান্তিক। সুতরাং আমাদের উচিত তাঁদের সহায়তা করা। এর পাশাপাশি এই যুদ্ধ বন্ধ করা।’
বিশ্ববাসীকে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এরইমধ্যে বাংলাদেশ কিছু সহায়তা পাঠিয়েছে। এই অভিযানকে আমরা কখনোই সমর্থন করি না। ফিলিস্তিনিদের নিজেদের ভূখণ্ডে থাকার অধিকার রয়েছে। ১৯৬৭ সালে জাতিসংঘে দ্বিরাষ্ট্র সমাধান প্রস্তাব দেয়। এটি বাস্তবায়ন করা উচিত।’
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজায় নৃশংস হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইজরায়েল। তাদের অমানবিক হামলায় এখন পর্যন্ত ২৮ হাজার ৮৫৮ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন ৬৮ হাজারের অধিক মানুষ।
ইসরায়েলি হামলায় উপত্যকাটির এক ইঞ্চি জায়গাও নিরাপদ নেই। মসজিদ, বেসামরিক ঘর-বাড়ি, হাসপাতাল, স্কুল, আশ্রয়কেন্দ্র কোন কিছুই তাদের হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। গাজার উত্তরে হামলা চালানোর পর দক্ষিণ গাজাতেও হামলা চালিয়েছে দখলদার দেশটি। এবার ফিলিস্তিনি সীমান্ত রাফায় হামলার পরিকল্পনা করছে ইহুদিবাদী ইসরায়েল।
রাফাহতে অভিযান না চালানোর অর্থ ‘যুদ্ধ হেরে যাওয়া’। গতকাল শনিবার টেলিভিশনে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বার্তা সংস্থা এএফপি বলেছে, গতকালের টেলিভিশন বক্তৃতায় নেতানিয়াহু আবারও রাফাহতে যুদ্ধ চালানোর ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘যারা রাফাহতে অভিযান চালানোর ব্যাপারে সমালোচনা করছে, তারা চায় ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে পরিচালিত এই যুদ্ধে পরাজিত হোক।’
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, প্রাণ বাঁচাতে গাজার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ১৪ লাখ ফিলিস্তিনি রাফাহ সীমান্তের বিভিন্ন শরণার্থী শিবির ও হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে খাবার, পানি, জ্বালানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র সঙ্কট রয়েছে। অসহনীয় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন সেখানে আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিরা।
এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, রাফাহতে অভিযান চালালে চরম ‘বিপর্যয়কর’ এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। এই এলাকায় অভিযান না চালাতে ইসরায়েলকে চাপ দিচ্ছে আমেরিকাসহ আরও বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ। তবে কারও কথাতেই কর্ণপাত করছেন না নেতানিয়াহু। গতকালের বক্তব্যে তিনি স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, ‘আমরা যদি হামাস নির্মূল করেও ফেলি, তবু রাফাহতে প্রবেশ করব।’