গাজায় গণহত্যা ও যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে লন্ডনে ১০ লাখ লোকের মিছিল
লন্ডনে ফিলিস্তিনের পক্ষে প্রায় ১০ লক্ষ লোক মিছিল করেছে বলে জানিয়েছে মিছিলের আয়োজকরা।
ব্রিটেনের মুসলিম অ্যাসোসিয়েশনের একজন সংগঠক মুস্তাফা আল-দাব্বাগ বলেছেন, গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের অবসানের দাবিতে এক মিলিয়ন (১০ লাখ) মানুষ লন্ডনের রাস্তায় নেমেছে।
আল-দাব্বাগ কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে বলেন, “আমাদের প্রতিবাদ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। তবে আমাদের বিরুদ্ধেকিছু ডানপন্থীরা বিক্ষোভ করেছে। তাদের দ্বারাই ব্যাঘাত ঘটেছে। তাদের মধ্যে প্রায় ১০০ জনকে আজ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি এটিকে সম্পূর্ণ হাস্যকর বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, “তারা আমাদের হোম সেক্রেটারির (সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান) বক্তব্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। সে আমাদের সমাজের মধ্যে বিভাজন তৈরিতে ব্যস্ত।"
কিছু ডানপন্থী বিক্ষোভকারী অফিসারদের দিকে বোতল ছুড়ে মারে, এবং রাস্তায় উত্তেজনার রিপোর্টের প্রতিক্রিয়া জানাতে পুলিশের গাড়ি শহরের চারপাশে ছুটে চলে। লন্ডনের মেট পুলিশ বলেছে যে, পরে তারা ৮২ জন পাল্টা প্রতিবাদকারীদের গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ বলেছে যে প্যালেস্টাইনপন্থী সমাবেশে "খুব বড়" জনতা ছিল এবং এখনও পর্যন্ত কোনও সংঘর্ষমূলক ঘটনা ঘটেনি।
গত ৭ অক্টোবর গাজার স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের আক্রমণে ইসরায়েলের ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি নিহত হয়। এ ছাড়া হামাস জিম্মি করেছে অন্তত ২৪০ জন। এ হামলার পরপরই গাজায় পাল্টা হামলা চালায় ইসরায়েল।
গাজার অমানবিক ও বর্বর হামলা থেকে হাসপাতাল, স্কুল, বেসামরিক ঘর-বাড়ি এমনকি শরণার্থী শিবিরও রক্ষা পাচ্ছে না। ইতোমধ্যে তারা ৩২ হাজার টন বোমা ফেলেছে গাজায়। গাজার প্রায় অর্ধেক ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ১১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের বেশির ভাগই শিশু। এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার শিশু নিহত হয়েছে ইসরায়েলি হামলায়। এছাড়া ৩ হাজারের মতো নারী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও প্রায় ২৭ হাজার মানুষ। ঘরছাড়া হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ ফিলিস্তিনি।
ইসরায়েলি এই বর্বর হামলার প্রতিবাদে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিক্ষোভ জানানো হচ্ছে। নিউ ইয়র্কসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় শহরে ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এছাড়া গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্যও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। লন্ডন, গ্রিস, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ডস, স্পেন, কানাডা, তুরস্ক, মিশর, লেবানন, ইরাক, ইরান, ভারতসহ বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে বিক্ষোভ হয়েছে। এর পরেও ইসরায়েল গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে।