বছরে ৪ বার বাড়ানো হবে বিদ্যুতের দাম
বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর জন্য নেওয়া হয়েছে ভিন্ন পন্থা। হঠাৎ দাম বাড়িয়ে গ্রাহকদের অসুবিধা যেন না হয় সেজন্য ভর্তুকি কমিয়ে আনতে বছরে চারবার বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করবে সরকার। পর্যায়ক্রমে ২০২৫, ২০২৬ এবং ২০২৭ সালে এভাবেই বাড়ানো হবে। সেই সঙ্গে গ্যাসের ভর্তুকিও ধীরে ধীরে প্রত্যাহার করা হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২ মে) সচিবালয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগ এ কথা জানিয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদকদের বকেয়া বিল এবং বন্ডের মাধ্যমে তাদের কত টাকা পরিশোধ করা হয়েছে তা জানতে চেয়েছে আইএমএফের দলটি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমন্বয়ের নামে মূলত বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। সরকার খরচ কমিয়েও ভর্তুকি সমন্বয় করতে পারে। অনিয়ম, দুর্নীতি, অপচয় রোধ করে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কমানোর দিকে সরকারের মনোযোগ নেই। বরং চাহিদা না থাকলেও দরপত্র ছাড়া একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে এ খাতের খরচ আরও বাড়াচ্ছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন (ক্যাব) অভিযোগ করেছে, সরকার কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য বিদ্যুৎ ও অন্যান্য জ্বালানির দাম বাড়াতে যাচ্ছে।
সরকার অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করলে এ খাতে ভর্তুকি দেওয়ার প্রয়োজনই হতো না বলে জানিয়েছে ক্যাব।
জানা গেছে, বৈঠকে পেট্রোবাংলা ও বিপিসি জানিয়েছে গ্যাস ও জ্বালানি তেলে নতুন করে ভর্তুকির চাপ নেই। ‘আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়লে দেশে বাড়বে, কমলে কমবে’ আইএমএফের বলা নীতিতে তেলের দাম স্বয়ংক্রিয় করার পদ্ধতি চালু হয়েছে। প্রতি মাসে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করার ফলে এ খাতে আর কখনো ভর্তুকি দিতে হবে না। প্রথম দুই দফায় দাম কিছুটা কমানো হলেও শেষ দফায় দাম বেড়েছে। তিন মাস ধরে এ চর্চা করা হচ্ছে।
অনেক শর্ত মেনে ২০২৩ সালে আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ পায় বাংলাদেশ। শর্তগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি কমিয়ে আনা, জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক রীতিনীতি অনুসরণ করা। ইতোমধ্যে ২ কিস্তিতে ১০০ কোটি ডলার ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ। চলতি মাসে ৭০ কোটি ডলার পাওয়ার কথা রয়েছে। আইএমএফের বর্তমান দলটি ২৪ এপ্রিল থেকে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করছে, যা শেষ হবে ৮ মে।