আজমেরী হক বাঁধন
কে দিয়েছে আপনাকে মানুষের পছন্দ নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার?
-1180913.jpg?v=1.1)
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রয়াণ দিবস (১৫ আগস্ট) উপলক্ষে সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেক তারকা সামাজিক মাধ্যমে শোকবার্তা জানিয়েছেন। কিন্তু দিন শেষে অনলাইনে গুজব ছড়িয়ে পড়ে— কিছু তারকাকে নাকি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে পোস্ট দেওয়ার জন্য অর্থ দেওয়া হয়েছে।
গুজব আরও তীব্র হয় একটি কথিত ব্যাংক স্টেটমেন্টের ছবি ভাইরাল হওয়ার পর। এ বিষয়ে এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দীর্ঘ একটি পোস্ট করেছেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন।
পোস্টটি হুবহু পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
‘কে দিয়েছে আপনাকে মানুষের পছন্দ নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার? শেখ হাসিনার মতো আচরণ করার চেষ্টা করবেন না— দেখেছেন তো তার কী হয়েছে। তার পতনের পর ভেবেছিলাম মানুষ অবশেষে শিক্ষা নেবে। কিন্তু না, অহংকার এখনো রয়েই গেছে!
কে আপনি যে মানুষকে কী করা উচিত বা কী করা উচিত নয়, তা ঠিক করে দেবেন? কাকে সমর্থন করবে বা করবে না, সেটা তাদের নিজস্ব পছন্দ— এটা আপনার দায়িত্ব নয় যে আপনি তাদের দিয়ে কিছু করিয়ে নেবেন। মানুষের নিজস্ব মন আছে, এবং যদি তারা শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মান করার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে সেটি তাদের অধিকার— আপনার সিদ্ধান্ত নয়। শুধু আপনার স্ক্রিপ্টের সঙ্গে মিলছে না বলে তাদের খারাপ মানুষ হিসেবে ব্র্যান্ডিং করা বন্ধ করুন।
আর এটা নিয়ে তো আমি হাসবই— আপনারা এত সস্তা যে এটা খুবই বিব্রতকর। প্রথমে গুজব রটল যে জুলাই বিপ্লবের সময় শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি ২০০ কোটি টাকা পেয়েছি। আর এখন, নতুন গুজব ছড়ানো হচ্ছে যে শেখ মুজিবকে নিয়ে পোস্ট করার জন্য আমরা নাকি মাত্র ২০,০০০ টাকা পেয়েছি!
সত্যিই? ২০০ কোটি থেকে ২০,০০০? কেউ কি এই ধরনের টাকার জন্য এত ঝুঁকি নিতে পারে? কী এক সার্কাস!
এটা পরিষ্কারভাবে বুঝে নিন আপনারা আর মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। মিথ্যা দিয়ে নয়, তুচ্ছ গুজব দিয়ে নয়, ফাঁকা হুমকি দিয়েও নয়। পৃথিবী বদলে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়া আছে। বিশ্বায়ন আছে। মানুষ আপনাদের বাজে কথা ধরে ফেলেছে।
একজন প্রকৃত নেতা মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করেন না— তিনি অনুপ্রাণিত করেন। একজন প্রকৃত নেতা কণ্ঠস্বর রুদ্ধ করেন না— তিনি শোনেন। একজন প্রকৃত নেতা ভিত্তিহীন গসিপ ছড়ান না— তিনি বিশ্বাস তৈরি করেন।
তাই ক্ষমতার এই মায়াজাল থেকে বেরিয়ে আসুন। মানুষকে পুতুলের মতো টানার স্বপ্ন দেখা বন্ধ করুন। সেই সুতো ইতোমধ্যেই ছিঁড়ে গেছে। ইতিহাস আরও কঠোর আঘাত করার আগে জেগে উঠুন।
একজন প্রকৃত নেতা হন। একজন প্রকৃত মানুষ হন। অন্যথায়, আপনিও শেখ হাসিনার ব্যর্থ প্রতিলিপি হিসেবেই শেষ হবেন— এবং বিশ্বাস করুন, সেই ট্র্যাজেডির পুনরাবৃত্তি কেউ চায় না।’