মৌলভীবাজার দিয়ে ১ মাসে ৩৩৭ জনকে পুশইন বিএসএফের

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২ জুন ২০২৫, ১০:০৩ AM

মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে গত এক মাসে ৩৩৭ জন বাংলাদেশিকে পুশইন করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতির উত্তেজনার মধ্যেই অবৈধভাবে এসব বাংলাদেশিকে সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে পাঠানো হয়।

সবচেয়ে বেশি অনুপ্রবেশ ঘটেছে বড়লেখা উপজেলার সীমান্তগুলো দিয়ে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য উত্তর শাহবাজপুর, দক্ষিণ শাহবাজপুর ও পাল্লথল সীমান্ত। এছাড়া জুড়ী উপজেলার রাজকি সীমান্ত, কুলাউড়ার মুরইছড়া এবং কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই, বাগীছড়া ও চাম্পাছড়া সীমান্ত দিয়েও অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে।

গত ৭ মে থেকে অবৈধভাবে মৌলভীবাজার জেলায় পুশইনের ঘটনায় ৩৩৭ জন বিজিবির হাতে আটক হয়েছেন। তার মধ্যে বড়লেখা উপজেলা দিয়ে ২৫১ জন, জুড়ী উপজেলা দিয়ে ১০ জন, কুলাউড়া উপজেলা দিয়ে ২১ জন ও কমলগঞ্জ উপজেলা দিয়ে ৫৫ জন। এ ছাড়া আরও কয়েক শতাধিক লোক সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করলেও বিজিবি বা স্থানীয় প্রশাসন তাদের আটক করতে পারেনি।

আটককৃতদের মধ্যে পুরুষ, নারী ও শিশু ছিল। এদের বাড়ি বাংলাদেশের নড়াইল, চট্রগ্রাম, কুড়িগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায়।

কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শীব নারায়ন শীল বলেন, আমরা যাদের আটক করি তাদের কাছে জানতে পারি তারা দীর্ঘ পাঁচ বছর থেকে ভারতের আসামে বসবাস করে আসছিলেন। হঠাৎ করে ভারতীয় পুলিশ তাদের বাড়িঘর ভেঙে হেলিকপ্টারে ত্রিপুরার মানিক ভান্ডারে নিয়ে এসে বিএসএফের হাতে তুলে দেয়। পরে বিএসএফ কয়েকজনকে ধলই সীমান্ত দিয়ে গেট খুলে পুশইন করলে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। তবে অন্যদের কোন সীমান্তে নিয়ে গেছে তারা বলতে পারেননি।

পুশইনের ঘটনা নিয়ে সার্বক্ষণিক কাজ করছেন স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী এম এ হামিদ। তিনি বলেন, সীমান্ত দিয়ে হাজারের অধিক মানুষ অবৈধ অনুপ্রবেশ করেছে। এসব ক্ষেত্রে বিজিবি কয়েকশ লোককে আটক করলেও অধিকাংশদের আটক করতে পারেনি। এদের অনেকেই স্থানীয় দালাল বা অন্য কোনো মাধ্যমে গাড়িতে করে নিজ নিজ বাড়িতে চলে গেছেন।

তিনি আরও বলেন, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের কেউ অ্যাম্বুলেন্সে, কেউ সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা অন্য গাড়িতে করে নিজ নিজ গন্তব্যে গেছেন। কারও কাছে টাকা না থাকলেও তারা বাড়িতে পৌঁছে বিকাশের মাধ্যমে টাকা দিয়েছেন। অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে অনেক রোহিঙ্গা ছিল বলে জানান তিনি, যারা স্থানীয় লোকদের সহায়তায় চট্রগ্রামে চলে গেছে।

এ বিষয়ে ৫২-বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী হাসান ও ৪৬ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম জাকারিয়া বলেন, আটককৃতদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশি। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।