আজিমপুরের স্টিল টাওয়ারে সেফটি ক্যানোপি-সেফটি নেট কিছুই নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০২৪, ১০:১৮ AM

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে শুক্রবার (২২ মার্চ) সকাল থেকেই বিপুল সংখ্যক ক্রেতার সমাগম ঘটতে শুরু করে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায়। এ মার্কেটে আগতদের একটি বড় অংশ আজিমপুর সরকারি কলোনির ভিতর দিয়ে যাতায়াত করে। সেইসঙ্গে কলোনির ভিতরে থাকা বাসিন্দা ও অগ্রণী স্কুলের হাজার হাজার শিক্ষার্থী-অভিভাবকদেরও চলাচলের রাস্তা এটি। কিন্তু দীর্ঘ কয়েকমাস ধরে ব্যস্ততম এ সড়কটি ঘিরে ভয়াবহ আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। নীলক্ষেত মোড় থেকে বিজিবি গেটের দিকে যেতে এবং কলোনির ভেতর থেকে বের হওয়ার মুখেই একটি বিশাল আকারের একটি ভবন নির্মিত হচ্ছে।

সম্পূর্ণ স্টিল দিয়ে নির্মিত এ বহুতল ভবনটির পাশ দিয়ে মানুষ হেঁটে যাওয়ার সময় চোখে-মুখে অনেকটা আতঙ্কের ছাপ থাকে। এর কারণ, লোহা-লক্কড়ের বিশাল এ কর্মযজ্ঞের ক্ষেত্রে নূন্যতম পরিমাণ সেফটি ক্যানোপি এবং সেফটি কাভার নিশ্চিত করা হয়নি। স্টিলের বড় বড় খণ্ড উঠানামার ক্ষেত্রে কোন ধরনের সেফটি কাভার বাই নেট (নিরাপত্তা জাল) না থাকায় দেখতেই অনেকটা ভয়ংকর মনে হয়। যদিও এ ধরণের কাজের ক্ষেত্রে সরকারি অন্যান্য সংস্থা যেমন, হাতিরপুল এলাকায় ডিপিডিসির প্রধাণ কার্যালয় নির্মাণে দেখা যায় নির্মাণাধীন ভবনটি চারদিকে নিরাপত্তা জাল দিয়ে ঘেরা। আবার উপর থেকে নির্মাণসামগ্রী পড়ে যেন পথচারীরা কোন দুর্ঘটনার শিকার না হয় সেজন্য এক ধরণের সেফটি ক্যানোপি (নিরাপত্তা ছাউনি) দেওয়া আছে।

আতঙ্কের আরেক নাম আজিমপুর স্টিল টাওয়ার

গণপূর্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আজিমপুর সরকারি কলোনিতে বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ১৩ তলাবিশিষ্ট এই স্বয়ংক্রিয় কার পার্কিং বানানো হচ্ছে। ৭ হাজার ২০০ বর্গফুট আয়তনের এ স্থাপনায় মোট ২৪০টি গাড়ি রাখা যাবে। স্থাপনাটি নির্মাণ করতে খরচ হচ্ছে ৬৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান স্যামজাংটেক লিমিটেড থেকে সামগ্রী সরবরাহ নিচ্ছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রওশন এলিভেটরস লিমিডেট।

আতঙ্কের আরেক নাম আজিমপুর স্টিল টাওয়ার

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলোনির একাধিক বাসিন্দা সিটিজেন জার্নালকে জানান, ঢাকা শহরে প্রায়ই নির্মাণাধীন ভবন থেকে বিভিন্ন উপকরণ পড়ে পথচারীদের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। এর পরেও কারো টনক নড়ে না। আজিমপুরের এ স্টিলের ভবনটি নির্মাণের শুরু থেকেই নানা ধরণের ভোগান্তি তৈরি করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় অন্যান্য বিল্ডিং নির্মাণের ক্ষেত্রে মানুষের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা হলেও এ স্টিল ভবনের ক্ষেত্রে সেটি করা হয়নি। প্রকৌশলদের সঙ্গে আঁতাত অনেকটাই দায়সারাভাবে কাজ করে যাচ্ছে প্রকৌশলীরা। এ বিষয়ে বারবার বলা হলেও কর্ণপাত করেনি সংশ্লিষ্টরা।

অভিজ্ঞ প্রকৌশলীরা বলছেন, এই নির্মাণকাজে ইমরাত নির্মাণ বিধিমালা ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) মানা হচ্ছে না। এছাড়া প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) নিরাপত্তার জন্য যে অর্থ ধরা হয়েছে তা এখানে ব্যয় করা হচ্ছে না। নির্মাণ উপকরণ পড়ে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট এর দায় এড়াতে পারবেন না।  

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (ইএম-৩) নিয়াজ তানভীরের ব্যক্তিগত ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।