বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া; যাত্রীদের ক্ষোভ
![ট্রেন](https://citizenjournal24.com/resources/img/article/202403/95174_131.jpg?v=1.1)
গত কয়েকদিন ধরে ঈদের আগে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানো নিয়ে রেলওয়ের মহাপরিচালক ও রেলপথমন্ত্রীর ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া যায়। রেলের মহাপরিচালক ভাড়া বাড়ানোর কথা বলেন। কিন্তু রেলমন্ত্রী বলেন, কোনভাবেই ভাড়া বাড়বে না। এর মধ্যেই ট্রেনের টিকিটের মূল্যছাড় বাতিল করা হয়। যাত্রীরা বলছেন, সমন্বয়ের নামে ঈদের আগেই ভাড়া বাড়ানোয় যাতায়াত খরচ বাড়বে। যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাড়া সমন্বয় না করে রেলের দুর্নীতি, পণ্য পরিবহনে গুরুত্ব ও দখল জমি উদ্ধার করে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ভাড়া দিলে তাতে রেলের আয় বাড়বে।
আশানুরূপ সেবা না মিললেও এপ্রিলেই বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া। ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে যারা যাবেন, তাদের দিতে হবে বাড়তি ভাড়া।
রেলওয়ে মূল্যছাড় বাতিল করলে ১০০ কিলোমিটারের পর ২৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভাড়া বাড়বে ২০ শতাংশ। ২৫১ থেকে ৪০০ কিলোমিটারের মধ্যে বাড়বে ২৫ শতাংশ এবং ৪০০ কিলোমিটারের ওপরে যাত্রা করলে দিতে হবে ৩০ শতাংশ বেশি ভাড়া।
এতে পূর্বাঞ্চল রেলে গড়ে ১২০ থেকে ২১৬ টাকা এবং পশ্চিমাঞ্চলের টিকিটে ১২০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি ভাড়া গুনতে হবে। রেল কর্মকর্তারা বলছেন, লোকসান কমাতেই টিকিটের মূল্যছাড় বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে আয় হবে ৩০০ কোটি টাকা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, তেলের দাম যখন বাড়ানো হয়েছে, তখন কিন্তু টিকিটের দাম বাড়েনি। ভাড়া কিছুটা সমন্বয় করা হয়েছে। এতে যাত্রীদের ওপর বড় ধরনের চাপ পড়বে এমন না। তবে যাত্রীদের ওপর আপাতভাবে কিছুটা চাপ পড়তে পারে।
ট্রেনের টিকিটের মূল্যছাড় বাতিলের সিদ্ধান্তে বাড়ছে যাত্রীদের ক্ষোভ-উদ্বেগ। রাজধানীর কমলাপুরে কয়েকজন যাত্রী বলেন, ভাড়াটা বেশি হয়ে যাচ্ছে। এতে যাত্রীদের ওপর চাপ পড়বে। সাধারণ যাত্রীদের অনেকের জন্যই ভাড়া বাড়লে সেটা বহন করা সম্ভব হবে না। যতটা সম্ভব ভাড়া কম রাখা উচিত।
রেলের মূল্যছাড় বাতিলের সিদ্ধান্ত যৌক্তিক নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, পণ্য পরিবহন বাড়ানো ও দুর্নীতি কমালেই রেলের লোকসান কমবে।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, রেলের পরিচালনা ব্যবস্থায় অনিয়ম আছে এটা আমরা সবাই জানি। কেনাকাটায় দুর্নীতি আছে সেটা তো তারা ঠেকাতে পারছে না। সেই দায়ভার কি যাত্রীদের নিতে হবে?
হাদিউজ্জামান বলেন, রেলের লোকসানের পরিমাণ প্রতিবছরই বাড়ছে। তবে এ রেয়াতি সুবিধা বাতিল করলে লোকসান কমবে না। এজন্য পণ্য পরিবহনে গুরুত্ব দিতে হবে, পাশাপাশি দুর্নীতি কমাতে হবে। তাহলেই রেল লাভের মুখ দেখবে।
সবশেষ ২০১৬ সালে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল। যাত্রীদের আকৃষ্ট করতে ১৯৯২ সাল থেকে টিকিটে মূল্যছাড় দেয় রেলওয়ে।