ছাত্রদল মনোনিত ভিপি পদপ্রার্থী আবিদুলের যত অভিযোগ

বিগত ১৭ বছর ধরে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের নামে জামায়াত-শিবির এমনকি বিএনপির ওপরেও অত্যাচারের স্টিম রুলার চালিয়েছিল ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার আওয়ামী সরকার। তিনি একাত্তর ধারণ করার চেয়ে একাত্তর নিয়ে রাজনীতি বেশি করেছেন বলে অনেকের অভিযোগ। একাত্তর ইস্যু নিয়ে বিএনপিও একই পথে হাটছেন বলে অনেকেই অভিযোগ করেছেন। এবার যেন তারই এক ঝলক দেখা গেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মনোনীত ভিপি প্রার্থী মো. আবিদুল ইসলাম খানের কথায়। তিনি বলেছেন দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বাধীনতার আইডিওলজিকে (মতাদর্শ) যারা ধারণ করে না, তাদের ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রথম পক্ষপাতিত্ব করেছে।
রোববার ঢাবির বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলে সামনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় শেষে সাংবাদিকদের সামনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
আবিদুল বলেন, ‘একমাত্র ছাত্রদলের গণ-অভ্যুত্থানে পূর্ণাঙ্গ স্টেক থাকার পরও সেই স্টেক বা অধিকার কাজে লাগিয়ে বিজয়ের ৫ আগস্ট থেকে এই ২০২৫ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত কোনো রকম অনধিকার চর্চা করিনি আমরা। কোনো সচিবালয়ে যাইনি। মন্ত্রণালয়ে যাইনি। অধিদপ্তরে যাইনি। একমাত্র ছাত্রসংগঠন হিসেবে আমরাই স্বচ্ছতার প্রমাণ দিয়েছি। বাদবাকি যে সংগঠন দেখতে পাচ্ছেন, তারা অনধিকার চর্চা করেছে; যার প্রমাণ জাতির সামনে আছে।’
ছাত্রদলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ এনে ডাকসুর এই ভিপি প্রার্থী বলেন, ‘অন্য সংগঠন বা প্রতিপক্ষ আমাদের বিভিন্নভাবে এবং মেয়েদের সাইবার বুলিংয়ের মাধ্যমে হেনস্তা করে বারবার বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমাদের বিরুদ্ধে তারা অনৈতিক অভিযোগ নিয়ে আসছে যে আমরা আচরণবিধি মানি না, এটা করি না, সেটা করি না, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের পক্ষপাতিত্ব করছে।’
নির্বাচনে অংশ নেওয়া এক ছাত্রসংগঠনের উদ্দেশে আবিদুল অভিযোগ করে বলেন, ‘ডাকসুর গঠনতন্ত্রে আছে, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের আইডিওলজিকে সমুন্নত রাখা। এই স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বাধীনতার আইডিওলজিকে যারা ধারণ করে না, তাদের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রথম পক্ষপাতিত্ব করেছে।
‘প্রতিহিংসার রাজনীতি আমরা বারংবার নিরুৎসাহিত করেছি। কিন্তু বারবার আপনারা আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আঘাত করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটিতে বিভিন্নভাবে মুক্তিযুদ্ধের মহান নেতাদের পোস্টার আপনারা নিচে ফেলে পাড়িয়েছেন। স্বাধীনতাবিরোধীদের পোস্টার লাগিয়েছেন। তারপরও আমরা বারবার ধৈর্য ধরেছি।
‘যে জেনারেশনটা গুপ্ত রাজনীতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে করে গিয়েছে আধিপত্য বজায় রাখার জন্য, নিজেরা গুপ্ত থেকে অন্য রাজনৈতিক সংগঠনকে রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালিয়েছে, তারা ব্যর্থ হয়ে পরবর্তীকালে যখন প্রকাশ্যে এসেছে, তখন দেখা গেল তাদের প্রধান প্রধান নেতা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা।’
ছাত্রদল প্রার্থীদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হচ্ছে, তা কোনোভাবে অভিযোগের মধ্যেই পড়ে না উল্লেখ করে আবিদুল বলেন, ‘ছাত্রদল একমাত্র সংগঠন, যারা নির্বাচনে সুশৃঙ্খলভাবে ও সকলকে মর্যাদা দিয়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীমউদ্দীন হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও জিএস প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামিম, এজিএস প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ প্রমুখ।