টানা ছুটিতে কক্সবাজারসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে বেড়েছে ভিড়
বিজয় দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে সাগর-পাহাড়ে ছুটছেন পর্যটকেরা। এ ছাড়া বেশিরভাগ স্কুল বন্ধ থাকায় কক্সবাজার ও তিন পার্বত্য জেলাসহ দেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে বেড়েছে পর্যটকদের ভিড়।
পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অবরোধে কিছুটা বিপাকে ছিলেন ব্যবসায়ীরা। পর্যটক সমাগম বাড়ায় স্বস্তি জানিয়েছেন তারা। সপ্তাহিক ছুটিতে সৈকতনগরী কক্সবাজার ও তিন পার্বত্য জেলার ৬০ শতাংশ হোটেল মোটেল বুকিং হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সমুদ্রের হাতছানিতে কক্সবাজারে আসছেন পর্যটকেরা। সৈকত ছাড়াও জেলার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখছেন ভ্রমণ পিপাসুরা। কক্সবাজার সমুদ্রে সৈকতে ঘুরতে আসা পর্যকেরা জানান, হরতাল–অবরোধ না থাকায় এবং পরিবেশ ভালো থাকায় ছুটি পেয়ে স্বজনদের নিয়ে ঘুরতে এসেছেন তারা।
এদিকে তিন পার্ব্যত্য জেলাতেও বেড়েছে পর্যটক সমাগম। খাগড়াছড়ির রহস্যময় সুড়ঙ্গ, ঝুলন্ত ব্রিজ, ঝরণাসহ সব জায়গাতেই দেখা গেছে ভিড়। বান্দরবানের শৈলপ্রপাত, নীলাচল, মেঘলা, চিম্বুক, নীলগীরী পর্যটকদের পদচারণায় মুখর।
খাগড়াছড়িতে ঘুরতে আসা পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বন্ধের মধ্যে ছুটি কাটাতে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে কিছু আনন্দঘন সময় কাটাতে তারা পাহাড়ে ছুটে এসেছেন।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় পর্যটন মৌসুমের। এবারের মৌসুম শুরু হতে না হতেই ২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপির ডাকা টানা অবরোধ কর্মসূচি পর্যটন বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ থাকায় পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ে কক্সবাজার। ফলে ভরা মৌসুমে প্রতিদিন পর্যটন খাতের সব অনুষজ্ঞ মিলে কমপক্ষে গড়ে ১০-১৫ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।
সূত্র আরও জানায়, পর্যটনের অন্ধকার যাত্রায় আলো হয়ে আসে কক্সবাজারের সঙ্গে রাজধানীর রেলপথ যোগাযোগ। ১ ডিসেম্বর থেকে বাণিজ্যিকভাবে ঢাকা-কক্সবাজারের পথে রেল যোগাযোগ চালু হওয়ায় প্রতিদিনই কয়েকশ পর্যটক আসা-যাওয়ায় রয়েছে। যদিও প্রায় ৫০০ আবাসিক প্রতিষ্ঠানের জন্য এ সংখ্যা অতি নগণ্য।
তবুও বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৪-১৬ ডিসেম্বরের হোটেল-মোটেলের প্রায় ৮০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে। পাঁচ তারকা হোটেলসহ কক্সবাজারে প্রায় পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল, কটেজ ও ফ্ল্যাট রয়েছে। এসব আবাসিক প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ আগামী ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত আগাম বুকিং। এছাড়া ১৫-১৬ ডিসেম্বর সেন্টমার্টিনগামী জাহাজগুলোতেও কোনো টিকিট নেই। সবমিলিয়ে চলমান অবরোধে ধরা ক্ষত কিছুটা পোষানোর স্বপ্ন দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
‘অরণ্য বিলাস’ নামে একটি হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুর রশীদ সাগর বলেন, ‘খাগড়াছড়ি পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়েছে। আগামী দুমাস যদি হরতাল অবরোধ না থাকে তাহলে এর আগে যে ক্ষতি আমাদের হয়েছে সেটি পুষিয়ে নিতে পারব।’
পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন ও ট্যুরিস্ট পুলিশ। বান্দরবান ট্যুরিস্ট পুলিশ পুলিশ সুপার মো. মনজুর মোরশেদ বলেন, ‘ট্যুরিস্ট পুলিশ পক্ষ থেকে আমাদের একটি ইনফরমেশন বোর্ড আছে। এটি প্রত্যেকটি হোটেল ও রিসোর্টে দিয়ে রেখেছি, যাতে যেকোনো ধরনের সমস্যায় পড়লে পর্যটকেরা আমাদের জানাতে পারেন।’