রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী উজ্জ্বল মল্লিকের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা
রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী উজ্জ্বল মল্লিকের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। গত ২ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এ আদেশ দেন। আদেশপত্রে স্বাক্ষর করেন মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন।
আদেশে বলা হয়, রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী উজ্জ্বল মল্লিকের বিরুদ্ধে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। এমতাবস্থায় সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হলো।
এর আগে মামলার স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের স্বার্থে গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রধান প্রকৌশলী উজ্জ্বল মল্লিককে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়।
প্রসঙ্গত, জানা যায়, প্রকৌশলী উজ্জ্বল মল্লিক ২০০৯ সালে প্রকল্প কর্মকর্তা হয়ে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে যোগ দেন। পরে তিনি ওই প্রকল্পে অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক এবং পরে পদোন্নতি পেয়ে প্রকল্প পরিচালক (পিডি) হন । ২০২০ সাল পর্যন্ত তিনি পিডি ছিলেন। একপর্যায়ে সংস্থাটির প্রধান প্রকৌশলী হয়েও পিডির পদে ছিলেন। পরে তাঁকে পিডির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পিডি থাকাকালে প্রকল্পের মহাপরিকল্পনায় বাণিজ্যিক ব্লকের সঙ্গে থাকা একটি আরবান ইউটিলিটি ফ্যাসিলিটির (ইউইউএফ) জায়গায় ৭ কাঠা আয়তনের প্লট বানিয়ে নিজের নামে বরাদ্দ নেন। পূর্বাচল প্রকল্পের ৫ নম্বর সেক্টরের ১০৩ নম্বর রোডের ৯১ নম্বর প্লটটির জন্য সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অথচ প্লটটির বাজারমূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা।
রাজউক সূত্র বলেছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রধান প্রকৌশলী (ডিজাইন ও নকশা) পদে পদোন্নতি পাওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে উজ্জ্বল মল্লিকের বিরুদ্ধে। পদোন্নতির জন্য নিয়ম অনুযায়ী তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ হেলালীর কাছ থেকে বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন (এসিআর) নেওয়ার কথা থাকলেও তিনি নেন আরেক প্রকৌশলী এ এস এম রায়হানুল ফেরদৌসের কাছ থেকে। বিষয়টি নিয়ে সংস্থাটির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম লিখিত অভিযোগ দিলে ৮ আগস্ট উজ্জ্বল মল্লিককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় কর্তৃপক্ষ। তিনি লিখিত জবাব দিলে ১৮ আগস্ট তা গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেন রাজউকের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ছিদ্দিকুর রহমান সরকার।
সূত্র বলছে, ওই পদে পদোন্নতির তালিকায় এক নম্বরে ছিলেন আব্দুল লতিফ হেলালী ও দুই নম্বরে ছিলেন নুরুল ইসলাম। এ পদোন্নতির অংশ হিসেবে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় যে দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু করেছিল, সেখানে আপত্তি দিয়েছিল দুদক। অনাপত্তি চাওয়া হলে ছক আকারে পাঠানো পত্রে দুদক উজ্জ্বল মল্লিকের নামের পাশে দুদকের মামলা করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
এসব বিষয়ে উজ্জ্বল মল্লিকের সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।