আগামী নির্বাচনে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসবে : শামা ওবায়েদ

ক্ষমতার জন্য জিয়া পরিবার রাজনীতি করে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। তিনি বলেন, তারেক রহমান সেই নেতা, যেই নেতা আগামীতে প্রধানমন্ত্রী হবেন। আগামী নির্বাচনে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসবে, তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন। তারেক রহমান এমন নেতা, তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি তার ৩১ দফায় দিয়েছেন এক ব্যক্তি এক বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। কারণ ক্ষমতার জন্য জিয়া পরিবার রাজনীতি করে না।
আজ রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজবাড়ী শহরের আজাদী ময়দানে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা এবং ফ্যাসিবাদের ষড়যন্ত্র মোকাবিলার দাবিতে জেলা বিএনপির জনসভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শামা ওবায়েদ বলেন, গত ৫ তারিখে স্বৈরাচারী হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। অহংকার পতনের মূল। আমাদের সবার এটা মনে রাখা উচিত। সেটার সবচেয়ে বড় সাক্ষী হচ্ছে শেখ হাসিনা। আজকে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার ৬ মাসর পরও কেন বিএনপিকে জেলায় জেলায় সমাবেশ করতে হচ্ছে। হাসিনা পালিয়ে গেছে কিন্তু জিনিসের দাম কমে নাই। হাসিনা পালিয়ে গেছে কিন্তু আপনারা সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেন নাই। হাসিনা পালিয়ে গেছে কিন্তু দুর্নীতি বন্ধ করতে পারেন নাই। হাসিনা পালিয়ে গেছে কিন্তু এখনো নারীরা ধর্ষিত হচ্ছে, দেশে চুরি হচ্ছে, ছিনতাই হচ্ছে, খুন হচ্ছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে বিএনপির এই নেত্রী বলেন, ইউনূস সাহেব আপনি কোনো সংস্কার করতে পারেননি। এই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়েছে। গত ১৫ বছর আপনারা যে যে ভাইয়েরই স্লোগান দেন সবাই জেল খেটেছেন, মামলা খেয়েছেন, গুম হয়েছেন। গত ১৫ বছর ধরে আমাদের নেতাকর্মীরা নির্যাতিত হয়েছে। এই ১৫ বছর যারা মারা গেছে আমরা তাদের স্মরণ করি। এই জুলাই আগস্টে শেখ হাসিন যেসব বাচ্চাদের টার্গেট করে গুলি করেছে তাদেরকে আমরা স্মরণ করি।
শামা ওবায়েদ আরও বলেন, আজকে যদি দুর্নীতি বন্ধ করতে হয়, যদি অর্থনীতির উন্নয়ন করতে হয়, যদি ব্যাংকিং খাত ঠিক করতে হয়, যদি একটি নতুন বাংলাদেশের জন্য এই ইয়াং জেনারেশন যে স্বপ্ন দেখছে সেই নতুন বাংলাদেশ যদি আমাদেরকে আনতে হয় তাহলে একটাই উত্তর তারেক রহমানের ৩১ দফা সারা বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা কেন মাঠে নেমেছিল? কারণ একজন আমার এক ভাই তিন বেলা না খেয়ে থাকে, আরেক চোর হাজার হাজার টাকা বিদেশে পাচার করে। আমার এক ভাইয়ের যোগ্যতা থাকা স্বত্বেও চাকরি হয় না, আরেক চোরে মন্ত্রী ও এমপি ধইরে ঘুষ দিয়ে চাকরি নেয়। ওই বৈষম্যের বাংলাদেশ আমরা আর দেখতে চাই না। আমরা সেই নতুন বাংলাদেশ চাই যেই বাংলাদেশে বেগম খালেদা জিয়া ১০ টাকা, ১২ টাকা কেজি চাল খাওয়াইছে। আমরা ঘরে ঘরে থাকা দক্ষ ও যোগ্য যুবকদের চাকরি দিতে চাই।
তিনি বলেন, আমরা জিয়ার সৈনিক। আমরা জনগণের পাশে থাকবো। জনগণের পাশে থেকে জনগণের সেবা করবো। আপনারা দেখেন বাংলাদেশের যখন বিপদ এসেছে, ক্রান্তিকাল এসেছে তখন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। যখন এরশাদ স্বৈরাচার কায়েম করেছে তখন বিএনপি ঢাল হিসেবে দাঁড়িয়েছে। যখন এদেশে বন্য হয়েছে তখন বিএনপি মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। যখন এদেশে কোভিড-করোনা হয়েছে তখন বিএনপি মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। মানুষের বিপদের সময় বিএনপি মানুষের পাশে থাকে। কিন্তু হাসিনা তার সঙ্গী সাথী রেখে পালিয়ে গেছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঘোষণা দিয়েছিল এই বাংলাদেশে দুইটা পদ্মা সেতু হবে। ইনশাল্লাহ বিএনপি যখন রাষ্ট্র গঠন করবে তখন এদেশে আরেকটি পদ্মা সেতু হবে। শেখ হাসিনা ওই পদ্মা সেতু করতে যত টাকা লুটপাট করছে তার অর্ধেকের অর্ধেক টাকায় এই পদ্মা সেতু হবে। বিএনপি দুর্নীতিতে বিশ্বাস করে না। দুর্নীতি দমনে বিশ্বাস করে।