বিক্ষোভকারীদের নিয়ে যা বললেন পলক ও দীপু মনি
চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে গভীর রাতে বিক্ষোভ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। হল থেকে বেরিয়ে আসেন ছাত্রীরাও। এসময় তারা স্লোগানে বলেন, 'আমি কে, তুমি কে? রাজাকার, রাজাকার', 'চাইলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার'। বিভিন্ন ক্যাম্পাসের এই উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে এবার বিক্ষোভকারীদের নিয়েও মন্তব্য করলেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। মূলত বিক্ষোভের স্লোগানের সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তারা।
নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে দীপু মনি লিখেছেন, 'যারা নিজেদেরকে রাজাকার বলে পরিচয় দেয়, তাদের মুক্তিযুদ্ধের শহীদের রক্তস্নাত লাল সবুজের পতাকা হাতে নিয়ে বা সে পতাকা কপালে বেঁধে নিয়ে মিছিল করবার কোন অধিকার থাকতে পারে না।'
রাত ১টা ৩৯ মিনিটে দেওয়া এই ফেসবুক স্ট্যাটাসটি খুব দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়।
অন্যদিকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক রাত ১২টা মিনিটে লিখেন, 'যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫ শে মার্চ ছাত্র শিক্ষকদেরকে গণহত্যা করেছে রাজাকাররা, সেই রাজাকারের পক্ষে রাজাকারের সন্তান বলে শ্লোগান দিতে লজ্জা করে না?' এরপর ১২টা ৫৪ মিনিটে আরেক পোস্টে তিনি লিখেন, 'তুমি কে? আমি কে? বাঙালি, বাঙালি। তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা-মেঘনা-যমুনা।'
রাত ১টা ১৫ মিনিটে পলক আবার একটি পোস্টার পোস্ট করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় শিল্পী কামরুল হাসানের আঁকা ইয়াহিয়া খানের দানবমূর্তির রক্তচোষা অভিব্যক্তির ছবিটি সেখানে ব্যকগ্রাউন্ডে ব্যবহার করা হয়েছে। লাল রঙের পটুভূমির ওপর সাদা ফন্টে লেখা রয়েছে, 'আছিস যত রাজাকার, এই মূহূর্তে বাংলা ছাড়!' ক্যাপশনে প্রতিমন্ত্রী পলক লিখেছেন, 'একাত্তরের হাতিয়ার / গর্জে উঠুক আরেকবার / তোরা যারা রাজাকার / এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়'।
দুই মন্ত্রীর পোস্টেই কটাক্ষ করে অনেকে মন্তব্য করেছেন। অনেকে সমর্থনও জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত রবিবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরা না পেলে, তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে? আমার প্রশ্ন দেশবাসীর কাছে। রাজাকারের নাতি-পুতিরা চাকরি পাবে, মুক্তিযোদ্ধারা পাবে না? নিজের জীবন বাজি রেখে বিজয় এনে দিয়েছিল বলে সবাই উচ্চপদে আসীন। না হলে পাকিস্তানিদের বুটের লাথি খেয়ে চলতে হতো।' প্রধানমন্ত্রী এই বক্তব্যের মাধ্যমে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অবমাননা করেছেন বলে দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা।