বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে ভুলের মধ্যে আছে: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘রাজনীতির ভিন্নমত থাকাটাই হচ্ছে গণতন্ত্র। একমত হতে না পারা সেটাই গণতন্ত্র। ১৪ দলের সাথে ইতিমধ্যে আলোচনা হয়েছে। সেটা দুই একদিনের মধ্যেই আসনের বিষয় ঠিক হবে। আর জাতীয় পার্টি এক সময় আমাদের মহাজোটে ছিল। তারা নির্বাচনে করছে। সুতরাং আলোচনা হওয়ার আগে কিছু বলা সম্ভব নয়।’
আজ বুধবার (৬ ডিসেম্বর) ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন কাদের।
জাতীয় পার্টি ও ১৪ দল সবাই সরকারের সঙ্গে মিশে যেতে চাচ্ছে ও নির্বাচনের নিশ্চয়তা চায়। এ ব্যাপারে কাদের বলেন, ‘এখানে মিশে যাওয়ার কোনো ব্যাপার নেই। জাতীয় পার্টি প্রায় ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়েছে। আর আসন ভাগাভাগির ব্যাপারে বাস্তবতা রয়েছে। সেটা আলোচনার বিষয়।’
তাহলে কি জাতীয় পার্টি ও ১৪ দল আসন ভাগাভাগি করে বিরোধী দল হবে— এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘সময় হলে বিরোধী দল দাঁড়িয়ে যাবে। তাছাড়া এখানে আরও অনেক দল আছে। তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম, সুপ্রিম পার্টিসহ বিভিন্ন দল রয়েছে।’
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতার বিষয়ে মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘এখন নির্বাচন কমিশনের অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যাপারে ভূমিকা থাকবে। এখানে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। এখন সরকার শুধু একটি রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। সরকারের কাজ হচ্ছে একটি সুন্দর সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করা। আমরা সেই কাজটি করে যাচ্ছি।’
১০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সমাবেশ করছে না জানিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু নির্বাচন কমিশন মানবাধিকার দিবসে সমাবেশ করার অনুমতি দিতে অপারগত প্রকাশ করেছেন। সেহেতু আমরা সমস্যা করব না। তবে দিবসটি ঘিরে আওয়ামী লীগের ঘরোয়া কর্মসূচি থাকবে বলে জানান তিনি।
মানবাধিকারের কথা বলে জনসম্পৃক্ততার অভাবে নির্বাচন বিরোধী দলগুলোর আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজকে আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে অগ্নি সন্ত্রাস ও নাশকতা দিয়ে আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। মানবাধিকার দিবসে সারা দেশ একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা নিয়ে তারা এগোচ্ছে। জামায়াতকে বিএনপি একান্তভাবে তাদের পাশে চায়।’
কাদের আরও বলেন, ‘আসলে বাস্তবতা হচ্ছে বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে ভুলের মধ্যে আছে। জামায়াতের সাথে ঘনিষ্ঠতার সূত্রে তারা যেভাবে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। তাতে এক সময় দেখা যাবে বিএনপির রাজনীতির যে মূল ধারা সেখানে নেতৃত্ব দিচ্ছে জামায়াত। আর বিএনপি এটার বি টিম হিসেবে আবির্ভূত হবে। বিএনপির ভুলের রাজনীতির কারণেই তারা জামাতের বি টিমে পরিণত হবে।’
জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় জোটের যদি সমন্বয় হলে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ কারা— জবাবে কাদের বলেন, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল প্রতিদ্বন্দ্বী আমাদের প্রতিপক্ষ। যারা নির্বাচন করছে তারা সবাই পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী। আমাদের দলের সভাপতি আসনে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। প্রতিযোগিতা তো হচ্ছে।’
মানবাধিকার দিবসে বিএনপি নাশকতা করতে পারে এমন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘আমরা খোঁজ খবর নিয়েই কথা বলছি। সরকারি দল হিসেবে আমাদের খোঁজখবর নেওয়ার সুযোগ টা বেশি। তাছাড়া বিভিন্ন সূত্র থেকে আমরা ইতিপূর্বে যে সমস্ত খবর পেয়েছি। বাস্তবেও সেগুলোর মিল পেয়েছি।’
আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, আফম বাহাউদ্দীন নাছিম প্রমুখ।