গুণ্ডাবাহিনী দিয়ে এনসিপি নেতাকে পেটালেন রুমিন ফারহানা!
-1240709.jpg?v=1.1)
বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার অভিযোগের পর এবার তাঁর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেছেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আতাউল্লাহ। রুমিন ফারহানা গুন্ডাবাহিনী দিয়ে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ এনসিপির এই নেতার।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুরে নির্বাচন ভবনে বেশকিছু আসনের সীমানা সংক্রান্ত দাবি-আপত্তির শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩। এক পর্যায়ে জেলার দুই আসনের লোকজনই উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এ সময় তারা হাতাহাতি ও বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে ইসি কর্মকর্তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
পরে আতাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার নির্বাচনী আসন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-৩ এবং বিজয়নগর নিয়ে। আমি এখানে শুনানিতে অংশ নেয়ার জন্য উপস্থিত হয়েছি। এখানে একে একে অনেকেই শুনানিতে অংশগ্রহণ করছে, যুক্তিতর্ক তুলে ধরছে। আমি যখন কথা বলতে যাব, ওই মুহূর্তে রুমিন ফারহানা আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন। তার গুন্ডাবাহিনী আমাকে টেনেহিঁচড়ে পায়ের নিচে ফুটবলের মতো লাথি-ঘুষি মারতে থাকে। সেখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন।’
এনসিপির এ নেতা বলেন, আমরা জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে জুলাই বিপ্লবে নেতৃত্ব দিয়েছি। আজ প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সামনে আমাকে যেভাবে পায়ের নিচে লাথি মারা হয়েছে, যেভাবে পেটানো হয়েছে, আমার জামাকাপড় ছিঁড়ে গেছে—সবাই দেখেছেন। আমি বলতে চাই, এই বাংলাদেশের জন্য আমরা জীবন দেইনি, রক্ত দেইনি, যাতে গণতন্ত্র নষ্ট হয়। আমরা চেয়েছিলাম একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকবে, যেখানে সবাই যুক্তি-তর্ক তুলে ধরতে পারবে। কিন্তু আমি আমার কথা বলতেই পারলাম না।
‘প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সামনে, নির্বাচন ভবনে যদি এত বড় একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটতে পারে, তাহলে বাংলাদেশের ৫৬ হাজার বর্গমাইলে কোথায় আমাদের নিরাপত্তা আছে? আমি নিরাপত্তা চাই’, যোগ করেন তিনি।
আতাউল্লাহ দাবি করেন, ‘এখানে ১০টি ইউনিয়ন থেকে তিনটি ইউনিয়ন—আশুগঞ্জ, সরাইল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া দুই আসনের সঙ্গে মিলিয়ে একটি খসড়া সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু বিজয়নগরের এই তিন এলাকার লোকজন সরাইল এবং আশুগঞ্জের সঙ্গে যেতে চাচ্ছে না। বিভিন্ন ভুল তথ্যের ভিত্তিতে এই তিনটি ইউনিয়নকে সরাইল এবং আশুগঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। অথচ এই তিনটি ইউনিয়ন সামাজিকভাবে, প্রশাসনিকভাবে এবং ভৌগোলিকভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের সঙ্গে সম্পৃক্ত, সদর তিন আসনের সঙ্গে সম্পৃক্ত।’
‘আমরা আবেদন জানিয়েছি, এই তিনটি ইউনিয়ন সদর তিন আসনের সঙ্গে রাখা হোক। এলাকার লোকজনও চায় না যে এই ইউনিয়নগুলো সরাইল ও আশুগঞ্জের সঙ্গে যুক্ত হোক’, যোগ করেন এনসিপির এ নেতা।
তবে বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, আমি কোনো গুন্ডাবদমাশের মেলা করিনি। করতে চাইলে করতে পারতাম। গুন্ডা আনতে চাইলে গুন্ডা আনা যায়, অসুবিধা হয় না। পাঞ্জাবি পরা একজন আমাকে ধাক্কা দিয়েছেন। তারপরে আমার লোক তো বসে থাকবে না। আমি তো একজন নারী। পরে যখন আমার লোকজনকে মারধর করেছে, আমার লোকজন জবাব দিয়েছে। সিম্পল। ধাক্কার বদলে তো ধাক্কা আসবেই, তাই না? সেটাই হয়েছে। নির্বাচনের আগে একটা সীমানা নিয়ে যদি এরকম আচরণ আমরা দেখি, তাহলে নির্বাচনে কী হবে?
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে এনসিপি নেতাকে বেধড়ক পেটাচ্ছেন রুমিন ফারহানার সমর্থকরা। আর রুমিন ফারহানা যেন দেখেও না দেখার ভান করছেন।
এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় ছড়িয়ে পড়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা রুমিন ফারহানাকে এনসিপি নেতা ধাক্কা দিয়েছে বলে ব্যাপক প্রচার করছে। তবে সাধারণ মানুষ ও এনসিপি নেতাকর্মীরা রুমিন ফারহানার কর্মকাণ্ডে যারপরনাই অবাক হয়েছেন। করছেন সমালোচনাও।