হাসিনা-কামালের ফোনালাপ নিয়ে তোলপাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ আগস্ট ২০২৫, ০৭:৫৮ AM

গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে নির্বিচারে গুলি বর্ষণের নির্দেশ দিয়ে ১৪০০ এর অধিক মানুষকে হত্যা করে শেখ হাসিনার সরকার। এরপর ৫ আগস্ট ব্যাপক গণবিষ্ফোরণের মুখে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যান তিনি। তবে ভারত থেকেও নিয়মিত হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামালের সঙ্গে মোবাইলে আন্দোলনকারীদের হুমকি দিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘রাজাকারের কী অবস্থা হয়েছে দেখিস নাই, সবগুলোকে ফাঁসি দিছি এবার তোদেরও ছাড়ব না।’ 

গত বছরের ১৪ জুলাই রাতে গণঅভ্যুত্থানের মুখে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন বলে জানান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সোমবার (১১ আগস্ট) ট্রাইব্যুনালে চানখারপুল গণহত্যা মামলায় সূচনা বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান। 

ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ মামলার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনসহ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেন– বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনা ও ঢাবির সাবেক ভিসির ফোনালাপ ফোনালাপ জমা দিয়েছে প্রসিকিউশন।

সেই অডিওতে ভিসি মাকসুদ কামালকে উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ইংল্যান্ডে ছাত্ররাজনীতির জন্য কয়েকজনকে গুলি করে মেরে ফেলেছিল, ওই রকম অ্যাকশন নেওয়া ছাড়া আরও কোনো উপায় নাই।

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর চানখারপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রথম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

এর আগে, বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে এজলাসে ওঠেন তিন বিচারপতির প্যানেল। এরপর সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে প্রথম সাক্ষী হিসেবে ডায়াসে ওঠেন শহীদ আনাসের বাবা সাহরিয়ার খান পলাশ। শপথ পড়ানোর পর তিনি গত বছরের ৫ আগস্ট ঘটে যাওয়া পুরো ঘটনা বর্ণনা করেন। একইসঙ্গে তার ছেলে আনাসসহ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্য নিহত-আহতদের জন্য দায়ীদের ফাঁসির দাবি করেন।

এদিকে হাসিনার এই ফোনালাপ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়। এত মানুষকে হত্যার পরেও শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কোনো অনুশোচনা নেই, বরং উল্টো হত্যার হুমকি দিচ্ছে, এই নিয়ে অবাক পুরো দেশ। তাদের হিংস্রতা দেখে হতবাক বাংলার মানুষ।