মোবাইল-ইন্টারনেটে শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি; অন্যথায় এনবিআর ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি
সম্প্রতি দেশের মোবাইল ফোনে এবং ইন্টারনেট সেবার ওপর নতুন করে সম্পূরক কর আরোপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে এটি সরকারের হঠকারী সিদ্ধান্ত এবং ন্যায়বিচার ও জনকল্যাণের নীতির পরিপন্থি বলে মন্তব্য করে শিগগিরই এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছেন মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। অন্যথায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ঘেরাও করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
আজ রবিবার (১২ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এমন ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই সিদ্ধান্ত জনগণের ইন্টারনেট সেবা ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করবে। তারা বলেন, ইন্টারনেটের ওপর কর কমালে সরকারের রাজস্ব বাড়তে পারে এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ধরে রাখতে সহায়তা করবে। বক্তারা সতর্ক করেন, যদি সরকার জনগণের দাবিগুলোর প্রতি গুরুত্ব না দেয়, তাহলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন বিঘ্নিত হবে এবং সামাজিক বৈষম্য আরও বৃদ্ধি পাবে।
বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, দেশের উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা প্রদান করা হয় এবং বর্তমান কর বৃদ্ধির ফলে গ্রাহকদের ভোগান্তি বাড়বে পাশাপাশি সেবাখাতও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বলেন, যদি সরকার আগামী সপ্তাহের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করে, তাহলে তারা শক্ত অবস্থান নেবে।
আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক উল্লেখ করেন, এটি ছোট উদ্যোক্তার জন্য একটি অত্যন্ত নেতিবাচক পদক্ষেপ এবং এতে গ্রাহকদের ওপর চাপ বাড়বে। ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা গ্রহণের আগ্রহ কমে যাবে, যা নতুন বৈষম্যের জন্ম দেবে।
প্রযুক্তিবিদ এবং বেসিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর বলেন, আলোচনার অভাবে কর আরোপ একটি স্বৈরাচারী পদক্ষেপ। এ ধরনের সিদ্ধান্ত টেলিযোগাযোগ খাতের জন্য বিপদজনক হতে পারে এবং এতে নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে বাঁধা সৃষ্টি হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মহিউদ্দিন আহমেদ অভিযোগ করেন যে, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বক্তব্যে বলেন, জনগণের স্বার্থ বিবেচনা না করে রাতের অন্ধকারে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা সামাজিক বৈষম্য তৈরি করবে।
মহিউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, যদি এক সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হয়, তাহলে তারা এনবিআর কার্যালয়ে অবস্থানসহ কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবেন।
মানববন্ধনে অন্যান্য বক্তার মধ্যে প্রযুক্তিবিদ ফিদা হক এবং ফ্রিল্যান্সারদের প্রতিনিধি আনিসও বক্তব্য দেন।