স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

অবৈধ বিদেশিদের বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৮ PM

বাংলাদেশে থাকা অবৈধ অভিবাসীদের জন্য দুঃসংবাদ। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, অবৈধ বিদেশিদের বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না। দেশে কতজন বিদেশি আছেন সেই তালিকা পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত হবে তারা কতদিন থাকতে পারবেন।

আজ রবিবার (৮ ডিসেম্বর) আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এ দেশে বসবাসকারী ভারতের নাগরিকদের ইঙ্গিত করে বলেন, এটি হঠাৎ কোনো সিদ্ধান্ত নয়। কতজন বিদেশি আছেন, কোন কোন দেশের বিদেশিরা আছেন সেই তালিকা পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তারা কতদিন পর্যন্ত এ দেশে থাকতে পারবেন।

সীমান্ত এলাকা পুরোপুরি নিরাপত্তার মধ্যে আছে জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এটি পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে বৈঠক হবে।

আগামীকাল ৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) উপলক্ষে বাংলাদেশ আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জসওয়াল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, ফরেন অফিস কনসাল্টেশন বৈঠকে ভারতের নেতৃত্ব দেবেন বিক্রম মিশ্রি। তার মূল বৈঠকটি হবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মোহম্মদ জসীম উদ্দিনের সঙ্গে। পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা আছে তার।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এই প্রথম উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হচ্ছে দুই দেশের মধ্যে। অবশ্য ড. ইউনূস সরকারের গত চার মাসে দু-দেশের মধ্যে তিনটি টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠক করেছে।

সবশেষ দুদেশের মধ্যে ফরেন অফিস কনসাল্টেশন বৈঠক ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এবারের এই বৈঠকে ভারতের অর্থায়নে উন্নয়ন প্রকল্প পুনরায় শুরু করা, ভিসা ব্যবস্থার সহজীকরণ, সরাসরি ফ্লাইট বাড়ানো এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয়গুলো আলোচনা করা হবে বলে জানা গেছে। দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা প্রশমন এবং সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে এবারের বৈঠকটিকে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংগঠিত গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই এক ধরনের টানাপোড়েন চলে আসছে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে। এখন নতুন করে সংখ্যালঘু ইস্যু সামনে নিয়ে আসছে দেশটি।

সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তারের পর পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়। তাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে হয়েছে ভারতের একাধিক স্থানে। এ ছাড়া গত সোমবার (২ ডিসেম্বর) ত্রিপুরার আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এ ঘটনায় শক্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ। ঘটনার একদিন পর ভারতীয় হাইকমিশনারকে ডেকে ক্ষোভও প্রকাশ করে ঢাকা।

পরবর্তীতে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় ভারতও গভীরভাবে দুঃখপ্রকাশ করে। এ ছাড়া হামলার ঘটনায় জড়িত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেইসঙ্গে বরখাস্ত করা হয় তিন পুলিশ সদস্যকে। এ ছাড়া দুদেশের এই প্রেক্ষাপটে গত কয়েকদিন ধরে ভারতের প্রচারমাধ্যম বাংলাদেশ নিয়ে ব্যাপক মিথ্যাচার করছে, ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ধরা পড়ছে।