জনগণ যতদিন চায়, ততদিন এই সরকার ক্ষমতায় থাকবে: প্রধান উপদেষ্টা
ড. মোহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একটা প্রশ্ন সবার মনে, সেটা হলো এই সরকার কতদিন থাকবে? এ বিষয়ে ড. মোহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জনগণ যতদিন চায়, ততদিন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় থাকবে।
আজ বুধবার (২৮ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুইয়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এ কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, ‘ছাত্রদের নেতৃত্বে বিপ্লব অন্তর্বর্তী সরকারকে দেশ পুনর্গঠনের এক অনন্য সুযোগ এনে দিয়েছে। এটি একটি বড় দায়িত্ব। কিন্তু আমরা এটিকে একটি বড় সুযোগ হিসেবে দেখছি। যদি আমরা এই সুযোগটি কাজে লাগাতে না পারি, তবে এটি একটি বড় ব্যর্থতা হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণ যতদিন চায় বা যতক্ষণ চায় ততদিন থাকবে।’
এ সময় ফরাসি রাষ্ট্রদূত মাসদুপুই জানান, অন্তর্বর্তী সরকার এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেশ পুনর্গঠনের প্রচেষ্টায় ফ্রান্স সমর্থন দিতে প্রস্তুত।
রাষ্ট্রদূত আরও জানান, ফরাসি প্রেসিডেন্ট তাকে সুবিধাজনক সময়ে ফ্রান্স সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তিনি জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে নিহত ছাত্র এবং অন্যান্য নাগরিকদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন।
ড. ইউনূস ফরাসি দূতকে জানান, তিনি দেশে পুনর্মিলনের আহ্বান জানিয়েছেন এবং দেশের মানুষকে একটি বড় পরিবারের অংশ" হিসেবে দেখার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কখনও কখনও আমরা খুব শক্তভাবে মতবিরোধ করি। কিন্তু এর মানে এই নয় যে আমরা শত্রু। সরকার প্রতিটি নাগরিকের অধিকার রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আসুন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করি। আমাদের কাজ হলো সংবিধানকে আমাদের জন্য কার্যকর করা।’
ফরাসি দূত মাসদুপুই বলেন, ‘ফ্রান্স ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর সাথে কাজ করছে এবং দুর্নীতি দমন, মানব পাচার, ফরেনসিক সাইবার ক্রাইম, বন্দর ও বিমানবন্দর নিরাপত্তা এবং আর্থিক অপরাধ মোকাবেলায় দক্ষতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে সহায়তা দিতে আগ্রহী।’
এ সময় আগামী অক্টোবরে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ ঢাকার ৬৫তম বার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ড. ইউনূসকে আমন্ত্রণ জানান তিনি। ফরাসি দূত জানান, ফ্রান্সের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে তিনটি সোলার পার্ক স্থাপন এবং দেশের ১৫টি বজ্রপাতপ্রবণ জেলায় লাইটনিং অ্যারেস্টার স্থাপনে আগ্রহী।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকলস ও মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনা মো. হাসিমের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টা কানাডাকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের বড় বিনিয়োগের প্রয়োজন। অন্তর্বর্তী সরকার একটি সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত অর্থনীতি উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছে, যেখানে বিশাল পরিমাণ ঋণ জমা হয়েছে। আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হচ্ছে অর্থনীতি ঠিক করা। এছাড়া সরকার পূর্ববর্তী সরকারের দ্বারা ভেঙে পড়া গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরুদ্ধার করছে এবং শাসনে শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা আনছে।’
অন্যদিকে, মালয়েশিয়ার হাইকমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টা আসিয়ানের সদস্যপদ লাভে দেশটির সমর্থন চান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আসিয়ান ও সার্কের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন হতে পারে।’